সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

গরুর দুধের খামার করে স্বাবলম্বী

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

গরুর দুধের খামার করে স্বাবলম্বী

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন ছোট কামারকুণ্ডু গ্রামের নওশের আলী। কিন্তু তিনি এখন নিজেই স্বাবলম্বী এবং অনেক সম্পদের মালিক। তিনি এই সাফল্য অর্জন করেছেন গরুর দুধের খামার করে। তার খামারে এখন বহু মানুষ দিনভর ভিড় করছেন। নওশের আলী ২০১৩ সালে কুষ্টিয়া জেলার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। এ সময় তার চোখে পড়ে একটি দুধের খামার। তখনই তার মাথায় আসে নিজেই একটি গরুর খামার করবেন। এরপর তিনি নেমে পড়েন সেই কাজে। স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নেন। কেনেন একটি ফ্রিজিয়ান গাভী। শেষ পর্যন্ত সেই গাভীই তাকে দুধে-ভাতে সম্পদশালী করে তুলেছে। এখন নওশের ১১টি গাভীর মালিক। কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটাতে বাড়ির পাশে এক বিঘা জমিতে চাষ করেছেন নেপিআর ঘাস। সেই ঘাস থেকে ১১টি গরুর খাবার হয়ে যায়। পাশাপাশি অবশ্য দানাদার খাদ্য খৈল, ভুসি ও ক্যালসিয়াম ওষুধ খাওয়াতে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাছুর হওয়ার পর থেকে প্রতিটি গাভী দিনে ১৬ কেজি করে দুধ দেয়। ১২০০ টাকা খরচ বাদ দিয়ে নওশেরের প্রতিদিন দুধ থেকে আয় হয় দুই হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, বছরে ৫টি বাছুর ৫০ হাজার টাকা করে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করেন। শুধু গরু পালন করেই থেমে নেই তিনি। বাড়িতে দেশি জাতের মুরগি পালন করছেন। যা থেকে তিনি আয় করছেন। এ টাকা দিয়ে তিনি তিন ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। ছেলে এরই মধ্যে আর্মি মেডিকেল ল্যাবরেটরি মেডিসিনের শেষ বর্ষের ছাত্র। আর দুই মেয়ে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও অন্যজন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। নওশের আলী জানান, গরু পালন করার মূল হচ্ছে ধৈর্য ও পরিচর্যা। তিনি সমস্যা সম্পর্কে বলেন, গরুর খামার করায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের নজর দেওয়া উচিত। ঝিনাইদহে পশু হাসপাতালে অভিজ্ঞ কোনো ডাক্তার নেই এবং যারা আছেন তারা কোনো খোঁজখবর রাখেন না। যার কারণে গরুর সঠিক রোগ নির্ণয় ও কনসেপ্ট নিয়ে সমস্যা হয়। কোনো খামারিকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয় না। এসব সমস্যা দূর করলে ঘরে ঘরে দুধের খামার গড়ে উঠতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর