মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঐশীকে ১০ এপ্রিল আদালতে হাজিরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পিতা-মাতা হত্যাকাণ্ডের আসামি পুলিশ কর্মকর্তার একমাত্র কন্যা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানকে ১০ এপ্রিল আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। ঐশীর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানির সময় গতকাল বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বিচারপতি মো.জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। ঐশীর মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে তাকে হাজির করতে আইজি প্রিজনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে ঐশীর আইনজীবীরা বলেন, কোনো সুস্থ ব্যক্তি বাবা মাকে হত্যা করতে পারেন না। একটি মেডিকেল রিপোর্টে দেখা গেছে ঐশী মানসিক বিকারগ্রস্ত। এরপর আদালত তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেয়। তবে ঐশীকে উচ্চ আদালতে হাজির করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে ঐশীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে এই দম্পতির একমাত্র কন্যা ঐশী রহমানকে ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ঐশীকে আশ্রয় দেওয়ায় তার বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেয় আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর হাই কোর্টে ঐশী আপিল করেন। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবেও মামলাটি হাই কোর্টে আসে। বিচারিক আদালতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে দণ্ড কার্যকরে হাই কোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ‘ডেথ  রেফারেন্স’ মামলা হিসেবে পরিচিত। রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে সপরিবারে থাকতেন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান। ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট ওই বাসা থেকে স্ত্রী স্বপ্না রহমানসহ তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত মাহফুজুর রহমানের ভাই মশিউর রহমান ওই দিনই পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহত দম্পত্তির মেয়ে ঐশী রহমান গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশী ও তার দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র এবং নিহতদের বাসার শিশু গৃহকর্মী সুমীর বিরুদ্ধে শিশু আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। বিচারিক আদালত ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় গৃহকর্মী সুমীর বিচার চলছে শিশু আদালতে।

সর্বশেষ খবর