শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বড় ইলিশের ছড়াছড়ি

মোস্তফা কাজল

বড় ইলিশের ছড়াছড়ি

চৈত্র সংক্রান্তি আর বর্ষবরণের বাজার ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বড় ইলিশের আমদানি বেড়েছে। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে দেড় কেজি ওজনের এক জোড়া মাছ ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক কেজি ওজনের একটি মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা হাঁকছে। তবে পয়লা বৈশাখের আগে সামান্য বেড়ে যেতে পারে। বৈশাখের বর্ষবরণের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ইলিশের দাম তত বাড়বে। গতকাল ইলিশ মাছের পাইকারি বাজার পুরনো ঢাকার সোয়ারিঘাট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

 এ দুই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণের ৬/৭ দিন আগে থেকে শুরু হয় দাম বাড়ার প্রতিযোগিতা। এখনো দাম না বাড়লেও যে কোনো সময় বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতে সাত দিনে চাঁদপুর ও বরিশাল থেকেও কোনো ইলিশ মাছ যায়নি। মাছের উৎপাদন কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ইলিশের দাম পড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ঘটছে উল্টো। রাজধানীর খুচরা বাজারে একটু একটু করে বাড়ছে ইলিশের দাম। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে ৪৫ হাজার টাকা মণ দরের ইলিশের দাম দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকায়। পয়লা বৈশাখের আগে দাম কয়েক দফা বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ ইলিশের তেমন ঘাটতি চোখে পড়েনি রাজধানীর প্রধান বাজার কারওয়ান বাজারের মোকামে। এরপরও কেন বাড়ছে ইলিশের দাম তা খুঁজতে গিয়েই বেরিয়ে পড়ে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণের  বিষয়টি। তবে আমদানি বেড়ে গেলে দাম নাগালের মধ্যে থাকবে এমন প্রত্যাশার কথাও বলেছেন সাধারণ ক্রেতারা। সোয়ারিঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র বলেন, মাত্র ৩ দিন আগে বরিশাল ও চাঁদপুরের মোকামে এক কেজি সাইজের ইলিশের পাইকারি দর ছিল প্রতিমণ ৪২ হাজার টাকা। গতকাল থেকে দাম ৩ হাজার টাকা বেড়ে হয় ৪৫ হাজার টাকায়। ১ কেজি থেকে ১৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশের মণ এখন ৫২ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। দেড় কেজি ওজন হলেই তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ হাজারে। সোয়ারিঘাটের ব্যবসায়ী মোর্শেদ আলম বলেন, সাগরে কিংবা নদীতে ইলিশের তেমন একটা দেখা নেই। তার ওপর ক’দিন বাদেই সংক্রান্তি আর নববর্ষ। ইলিশ ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বলেন, সরবরাহের পরিমাণ আর চাহিদার হিসাব মেলালে বর্ধিত দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। চলতি মৌসুমে মাছের সরবরাহ কম থাকলেও গড়ে দৈনিক ৪/৫০০ মণ ইলিশ আসছে বরিশাল ও চাঁদপুরের বিভিন্ন মোকাম থেকে। ঢাকা মত্স্য বিভাগের কর্মকর্তা মো. মোজাফ্ফর রহমান বলেন, সিজন কিংবা অফ সিজন সব সময়ই কম-বেশি ইলিশ ভারতে পাঠান রফতানিকারকরা। খরা মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে গেছে ১২ হাজার ৫১৬ মণ ইলিশ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত রফতানি হওয়া ইলিশের পরিমাণ ১ হাজার ৯৪৭ মণ। কিন্তু ৩১ মার্চের পর আর  ইলিশ রফতানি হয়নি। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিএফডিসির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখের ৩/৪ সপ্তাহ আগে থেকে বন্ধ হয়ে যায় ইলিশ রফতানি। অথচ ভিতরে ভিতরে ঘটে ভিন্ন ঘটনা। এরপর চলে ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি। ট্রলার মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা বৈশাখের আগে শূন্য হয়ে যায় বরিশাল ও চাঁদপুরের মোকাম। সব ইলিশ চলে যায় ঢাকায়। কারণ পয়লা বৈশাখে ইলিশের চাপ শহরাঞ্চলেই থাকে বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর