শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

অনলাইন ব্যবসার আড়ালে সংগঠিত হচ্ছে জঙ্গিরা

জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপের ৮ সদস্য গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা থেকে জেএমবির ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন— জামাল ওরফে রাসেল জিহাদী (৩৫), খন্দকার আবু নাঈম ওরফে নাঈম জিহাদী (৪৯), নুরুল আবছার (২৭), মহসিন (৫২), জাবির হাওলাদার (২২), আক্তারুজ্জামান ওরফে মারুফ (৩২), হাফেজ মাওলানা ওমর ফারুক (৩২) ও কাশেম মুন্সি (৩১)। অনলাইন ব্যবসার আড়ালে এরা সংগঠিত হচ্ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ৫ জন ও কুমিল্লার গৌরীপুর থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জেহাদি বই এবং বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব বলছে, গ্রেফতারকৃতরা জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সদস্য। এরা এমএলএম পদ্ধতিতে জঙ্গি কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের আদমজীতে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত এসপি শাকিল আহমেদ বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে তারা একত্রিত রয়েছে। গ্রুপটির মূল সমন্বয়কারী জামাল। বিভিন্ন স্থানে নাশকতা করার উদ্দেশ্যে তারা বিস্ফোরক মজুদ করেছিল। সংঘবদ্ধ এই দলটি সংগঠনের জন্য সদস্যপদ বৃদ্ধি এবং সংগঠনের বিভিন্ন প্রয়োজন যেমন— সক্রিয় সদস্যদের জন্য বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য প্রয়োজনের তাগিদে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য নথিপত্র তৈরি করত। এ ছাড়াও তারা ফেসবুকে ভাইরাল আকারে বিভিন্ন উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার করত। সম্প্রতি সদস্য বৃদ্ধির জন্য ২ মাস পূর্বে ‘নতুন দিগন্ত’ নামে একটি অনলাইন ই-কমার্স জাতীয় ‘এমএলএম’ কোমপানি চালু করে। ইতিপূর্বেও তারা কয়েকটি অনলাইনভিত্তিক ‘এমএলএম’ কোমপানি চালু করেছিল বলে র‌্যাব জানতে পেরেছে। ওই কোমপানিগুলো জামাল, নাঈম ও আবছার পরিচালনা করত। আবছার ইতিপূর্বে ডেসটিনিতে তার অর্জিত কাজের অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে কাজে লাগায়। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি এড়াতে এরা ঘন ঘন কোমপানীর নাম পরিবর্তন করে। ‘এমএলএম’ কোমপানিতে গ্রাহক বৃদ্ধিতে তারা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে থাকে। তাদের যে কোনো গ্রাহক নির্দিষ্ট পণ্য বা নির্দিষ্ট দোকান থেকে পণ্য কিনলে ৫-১০% ছাড় পেয়ে থাকে। প্রতিটি গ্রাহককে সদস্য হতে হলে ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হয়। পরে এদের সঙ্গে সখ্য বৃদ্ধি করে এরা ফেসবুক আইডি নেয় বা নিজেরা সার্চ দিয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত। পরবর্তীতে বিভিন্ন উগ্রবাদী পোস্টগুলো তাকে পাঠাত। এভাবে এমএলএম পদ্ধতি জঙ্গিরা তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছিল। গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের মধ্যে থ্রিমা, ইমো, ওয়াটস এ্যাপস ইত্যাদির মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করত।

সর্বশেষ খবর