শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

জমির আশ্বাসে ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা আদায়!

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সরকারিভাবে ভূমিহীনদের জায়গা দেওয়া হবে। এজন্য ভূমিহীনদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে। আবেদন জমা দিতে লাগবে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা। এসব কথা বলে সাধারণ ভূমিহীনদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। শামীমা স্বাধীন নামের ওই নারী সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সংরক্ষিত ১৯, ২০, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এসব ওয়ার্ডের কয়েকটি স্থান থেকে আরেক মহিলার মাধ্যমে তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর শামীমা স্বাধীনকে এসএমএস পাঠিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, কয়েক দিন ধরে সিলেট নগরীর খরাদিপাড়ার আনন্দ ২০ নম্বর বাসার জেসমিন চৌধুরী ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ বালুচর ও খরাদিপাড়ার শতাধিক ভূমিহীন মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছিলেন। সরকারিভাবে ভূমিহীনদের জায়গা দেওয়া হবে, এমন কথা বলে কারও কাছ থেকে এক হাজার আবার কারও কাছ থেকে দেড়-দুই হাজার টাকাও নিচ্ছিলেন তিনি। শতাধিক ভূমিহীনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তোলেন তিনি।

এসব ভূমিহীনের কাছ থেকে জমি বরাদ্দ দিতে সরকারের প্রতি লেখা আবেদনপত্রও সংগ্রহ করেন তিনি। গতকাল জুমার নামাজের পর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মুরব্বিরা বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদকে জানান। কাউন্সিলর আজাদ এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। এমনকি সিটি করপোরেশন থেকেও এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। এ সময় স্থানীয়রা জেসমিন চৌধুরীর ফোন নম্বর দেন কাউন্সিলর আজাদকে। জেসমিন চৌধুরীকে ফোন করে নিজের কার্যালয়ে ডেকে আনেন আজাদ। ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে জেসমিন তা স্বীকার করেন। কাউন্সিলর আজাদকে তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলর শামীমা স্বাধীনের কথায় আমি ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। সে টাকা তাকেই দিয়েছি, আমি কোনো টাকা রাখিনি।’ তত্ক্ষণাৎ শামীমা স্বাধীনকে ফোন করেন কাউন্সিলর আজাদ। এ সময় শামীমা স্বাধীন কাউন্সিলর আজাদকে বলেন, ‘ভাই! বিষয়টি আপাতত থাক। এ নিয়ে পরে আপনার সঙ্গে কথা বলব।’ এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি শোনার পর আমি অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে সরকারিভাবে কিংবা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগে জেসমিন চৌধুরী নামের নারী আমার কার্যালয়ে ডেকে আনি। তিনি জানান কাউন্সিলর শামীমা স্বাধীন তাকে দিয়ে টাকা সংগ্রহ করিয়েছেন। আমি শামীমা স্বাধীনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।’ এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শামীমা স্বাধীনের বক্তব্য জানতে ফোন দেওয়া হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে এসএমএস পাঠালেও উত্তর পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর