বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাজারে এক বছর আগের ইলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক


বাজারে এক বছর আগের ইলিশ!

আর মাত্র দুই দিন বাকি। পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ-১৪২৪ উদযাপনের ক্ষণ গণনা চলছে। আগামী শুক্রবার নতুন বছরের আগমনবার্তা চারদিকে। গত কয়েক বছর ধরে বৈশাখে ইলিশ বিতর্ক চললেও ‘পান্তা-ইলিশ’ এর ঝোঁক কাটেনি নগরবাসীর। যদিও বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে নববর্ষ পালনে পান্তা-ইলিশের কোনো যোগসূত্র নেই। কিন্তু যোগসূত্র না থাকলেও ইলিশ নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই। ফলে বৈশাখ আসার বেশ আগে থেকেই বাজারে ইলিশের চাহিদা বেড়ে গেছে। চৈত্রের মাঝামাঝি থেকেই বাড়তি দামে বিকাচ্ছে নানা সাইজের ইলিশ। কাঁচা বাজারে, সুপার মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে এক বছর আগের কোল্ড স্টোরেজে রাখা পুরনো ইলিশ। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে হওয়ায় বাজারে যেমন জাটকা বিক্রি হচ্ছে, তেমনি অধিক লাভের আশায় দীর্ঘদিন কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগারে রাখা স্বাদহীন ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি দামে। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একশ্রেণীর মুনাফালোভী ইলিশ সিন্ডিকেট। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগারে সারাবছর প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মজুত করে রাখেন। অধিক মুনাফায় তারা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ বিক্রি করেন। নববর্ষ উপলক্ষে শুধু যে কোল্ড স্টোরেজে রাখা ইলিশের রমরমা বাণিজ্য হয় তা-ই নয়, জাটকা ধরা নিষিদ্ধ হলেও আসছে বিপুল পরিমাণ। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাটকা বিক্রির দায়ে কয়েকজন মত্স্য ব্যবসায়ীকে শাস্তি দিয়েছে ভ্রামমান আদালত।  

গত কয়েক দিন রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতেও ইলিশের পাশাপাশি অবাধে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশও। একইভাবে বিক্রি হচ্ছে মিয়ানমার এবং বার্মিজ ইলিশও। সোমবার রাতে যাত্রাবাড়ি মত্স্য আড়তের এক ব্যবসায়ী জানান, বেশিরভাগ ইলিশ মাছই বাইরে থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এরমধ্যে বেশির ভাগই বার্মিজ ইলিশ। বৈশাখ উপলক্ষে এগুলোকে পদ্মার ইলিশ বলে বিক্রি করা হচ্ছে। আরেক ব্যবসায়ী জানালেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কাঁচা ইলিশ (তাজা ইলিশ) পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, কার্টন প্যাকেটে কোল্ড স্টোরেজে রাখা ৭ থেকে ৮ মাস আগের বার্মিজ ইলিশ বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। গতকাল ভোরে যাত্রাবাড়ি মত্স্য আড়তে বাজার করতে আসা আজগার আলী জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানের ইলিশ মাছের দাম দ্বিগুন হয়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা; ৭শ-৮শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা এবং ৫শ-৬শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর দেড় কেজি, দুই কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার বিক্রি করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর