বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
মানবতা

ক্যামেরা ফেলে শিশুকেই বেছে নিলেন হাবাক

প্রতিদিনি ডেস্ক

ক্যামেরা ফেলে শিশুকেই বেছে নিলেন হাবাক

শিশুর নিথর দেহের পাশে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফটো সাংবাদিক হাবাক। আরেকটি শিশুকে বাঁচানোর চেষ্টা (নিচে) ছবি: টুইটার

বিরূপ কোনো পরিস্থিতিতে একজন ফটোসাংবাদিক আগে ছবি তুলবেন, নাকি দুর্গতকে সহায়তা করবেন? এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। সমপ্রতি সিরিয়ায় গাড়িবোমা হামলার ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী আবদ আলকাদার হাবাক।  ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে হতাহত ব্যক্তি। আগুন আর চিৎকার। এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে হাবাক ক্যামেরা ফেলে ছুটে যান আহত ব্যক্তিদের সহায়তায়। সমপ্রতি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর ফুয়া ও কাফরায়ার অবরুদ্ধ বাসিন্দাদের বহনকারী কয়েকটি বাসের বহরে গাড়িবোমা হামলা চালানো হয়। নিহত হন ৬৮টি শিশুসহ ১২৬ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। সিএনএনকে হাবাক বলেন, ‘সেখানকার দৃশ্য ছিল নির্মম...। বিশেষ করে শিশুদের চিৎকার। আমার সামনেই কয়েকজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।’ এ পরিস্থিতিতে তিনিসহ তার সহকর্মীরা আহত ব্যক্তিদের সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিলেন। হাবাক বলেন, ‘আমরা আমাদের ক্যামেরা একপাশে রেখে আহত লোকজনকে উদ্ধার করতে লাগলাম।’ প্রথম যে শিশুর কাছে হাবাক এগিয়ে যান, সে তখন প্রায় আধমরা। এরপর তিনি দৌড় দেন আরেকজনের কাছে। কেউ একজন চিৎকার করে তাকে বলছিল, দূরে থাকো... সেও মরে গেছে। কিন্তু হাবাক নিজে পরখ করে দেখতে চাইলেন। এগিয়ে গেলেন শিশুটির কাছে। শিশুটি কোনোমতে শ্বাস নিচ্ছে। প্রাণ আছে। দ্রুত তিনি শিশুটিকে কোলে তুলে অ্যাম্বুলেন্সের উদ্দেশে ছোটেন। তখনো তার হাতে ঝোলানো সচল ক্যামেরা এই ধ্বংসযজ্ঞ রেকর্ড করে চলেছে। হাবাক বলেন, ‘শিশুটি আমার হাত ধরল। এরপর চোখ দুটি একটু ফাঁক করে তাকাল।’ ঘটনাস্থলে থাকা আরেকজন আলোকচিত্রী মুহাম্মদ আলরাগিব এই দৃশ্যের ছবি তোলেন।

ছবিতে হাবাককে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে ছুটতে দেখা যায়। শিশুটি ও ক্যামেরা তার হাতে। আলরাগিব বলেন, তিনিও কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে সাহায্য করেছেন। এরপর ছবি তুলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার গ্রহণযোগ্যতার জন্য আমি সবকিছুর ছবি তুলতে চাইছিলাম।’

সর্বশেষ খবর