বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী প্রস্তুতি ও কোন্দল মেটাতে জেলা সফরে বিএনপি নেতারা

২২ এপ্রিল থেকে ৭ মে চলবে কর্মসূচি

মাহমুদ আজহার

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কিছুটা আগেভাগেই জেলায় জেলায় সাংগঠনিক সফরে বের হচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। ২২ এপ্রিল শুরু হবে এ সফর, শেষ হবে ৭ মে। সফর নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে কেন্দ্র থেকে জেলা ও মহানগর নেতাদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। নির্বাচনী হোমওয়ার্কের পাশাপাশি কোন্দল মিটিয়ে দলকে একটি শক্তিশালী প্লাটফরমে নেওয়াই এ সফরের উদ্দেশ্য।

দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য দিয়ে আরও জানায়, ঈদুল ফিতরের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিভাগীয় পর্যায়ে জনসভা করতে পারেন। এর আগে রমজানে তার লন্ডনে যাওয়ার কথা রয়েছে। বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে রমজানের শেষ দিকে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন। ঈদের পর নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি নিয়ে মাঠে নামবেন তিনি। এর আগেই দলকে গুছিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘শিগগিরই সাংগঠনিক সফরের চিন্তাভাবনা চলছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা, তাদের মতামত নিয়ে দল গোছানোই এর উদ্দেশ্য।’

জানা যায়, রমজানের আগেই সব জেলা, উপজেলা ও মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলসহ অসম্পূর্ণ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে কোনো দিন ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি হতে পারে। এরপর ছাত্রদলের কমিটিও দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে বেগম জিয়ার দিকনির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, জেলা সফরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিব সব নেতাকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কয়েকজন সাংগঠনিক সম্পাদককেও সফরে পাঠানো হচ্ছে। অতীতে জেলা সফরের দায়িত্ব নিয়েও অনেক নেতাই তৃণমূলে যাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই এবার বিষয়টি ‘শক্তভাবে’ কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন নিজেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে। জানা যায়, বিএনপির এখন সাংগঠনিক জেলা ৭৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭-এ। এর মধ্যে অর্ধেক জেলায় এখনো কমিটি করা সম্ভব হয়নি। যেসব জেলায় কমিটি দেওয়া হয়েছে অধিকাংশই অসম্পূর্ণ। আহ্বায়ক কমিটিও রয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শুধু বিএনপিই নয়, অঙ্গসংগঠনেরও নাজুক অবস্থা। ছাত্রদল-যুবদল কিংবা অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোতে দুই যুগেও কমিটি হয়নি এমন সংখ্যাই বেশি। এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা কথা বলে সুরাহার চেষ্টা করবেন। দ্রুত কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে। মূল দল ও অঙ্গসংগঠনের দূরত্ব কমানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন। একইভাবে আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী কারা হবেন, সে বিষয়েও খোঁজখবর নেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, ‘সাংগঠনিক পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা সব সময়ই চলে। তবে ঈদের আগেই দল গুছিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর