শিরোনাম
বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মডেল রাউধার লাশ পুনঃতদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

মডেল রাউধার লাশ পুনঃতদন্তের নির্দেশ

পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রাউধা আতিফের লাশ কবর থেকে তোলার আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিকাল ৩টায় রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত-১ এর বিচারক মাহবুবুর রহমান এ আদেশ দেয়। আদালতের পরিদর্শক আবুল হাশেম জানান, রাউধার লাশের আরেকবার ময়নাতদন্ত করতে চায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ জন্য লাশ কবর থেকে তুলতে আবেদন করা হয়েছিল। গতকাল আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেয়। তিনি জানান, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ তোলার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, লাশ তোলার আদেশ পাওয়া গেছে, এ বিষয়টি আমিও শুনেছি। গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাউধা এ কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নীলনয়না রাউধা ছিলেন মালদ্বীপের একজন উঠতি মডেল। মাত্র একুশ বছরের রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি। রাউধার লাশ উদ্ধারের দিন কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এ ঘটনায় ওই দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। এরপর রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। পরে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাউধাকে নগরীর হেতেম খাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয়। মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে ঘটনা তদন্ত করেন। দেশে ফিরে গিয়ে তারা জানান, রাউধাকে হত্যার কোনো প্রমাণ তারা পাননি। রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিও প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। তবে ১০ এপ্রিল রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মীরে। সিরাতের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। সিআইডি বলছে, কেবল হত্যার প্রমাণ মিললেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। তাকে নজরদারির ভিতরে রাখা হয়েছে।

এদিকে, রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন শাহ মখদুম থানার পরিদর্শক আনোয়ার আলী তুহিন। আর অপমৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করছিলেন রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম। রাউধার মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তার কক্ষ থেকে জব্দ করা ল্যাপটপ ও মোবাইলের ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সেগুলো সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছেন রাশিদুল ইসলাম। সে প্রতিবেদন এখনো ঢাকা থেকে আসেনি। এরইমধ্যে  ১৩ এপ্রিল মামলা দুটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপরই রাউধার লাশের পুনঃময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয় সিআইডি। রাউধার লাশ কবর থেকে তুলতে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক রবিবার আদালতে আবেদন করেন। আসমাউল হক বলেন, একই ঘটনা নিয়ে যেহেতু দুই রকম মামলা হয়েছে, তাই লাশের পুনঃময়নাতদন্ত হওয়া প্রয়োজন। রাউধা হত্যাকাণ্ডের শিকার কী না তা আরেকবার ময়নাতদন্ত করে নিশ্চিত হতে চাই।

সর্বশেষ খবর