বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

কওমি সনদের নিঃশর্ত স্বীকৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘হেফাজতের দাবি অনুসারে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনার পর কওমি মাদ্রাসা সনদের নিঃশর্ত স্বীকৃতির সরকারি ঘোষণায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

পার্টির পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘এটা অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে চরম কুঠারাঘাত। যেভাবে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে তোষামোদ করা হচ্ছে এবং তাদের কাছে নতি স্বীকার করে শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- তা দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকেই বাঁধাগ্রস্ত করবে। এসব লোকরঞ্জনবাদী অপধারার বিরোধিতায় সব অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর তরফ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে গতকাল এ আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংসদকে পাশ কাটিয়ে কওমি

মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি, এদেশের একমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার দাবিকেই নস্যাৎ করে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক করা হলো। শুধু তাই নয়- গোঁজামিল দিয়ে কওমি হেফাজতি নেতাদের নিয়ে তথাকথিত কওমি শিক্ষা বোর্ড বানিয়ে সনদের স্বীকৃতির যে চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সংকট দেখা দেবে। স্নাতক শিক্ষা অবশ্যই প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হতে হবে। কওমি মাদ্রাসার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র আইন বিবর্জিত কোনো স্বাধীন নীতি সার্বিকভাবে জাতির জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে।’ বিবৃতিতে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজত কর্তৃক শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ডাক দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সেই হেফাজতের সঙ্গে আপস অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পথকেই বাধাগ্রস্ত করবে। তাদের প্রতিটি দাবি মেনে নিয়ে ওই অপশক্তির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী স্পর্ধাকে আরও বাড়িয়ে দেওয়া হলো।’

 বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাষ্কর্য অপসারণ সম্পর্কে বলা হয়, ‘এর পরিণাম হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যসহ মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসমূহ অপসারণের দাবি উঠবে। জাতীয় রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি হারিয়ে যাওয়া ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা যতটুকু পুনরুদ্ধার করেছিল, তা আবার মুখ থুবড়ে পড়বে। ভোটের রাজনীতির ক্ষেত্রেও এটা কার্যকরী শক্তি নয়।’ বিবৃতিতে এ লোকরঞ্জনবাদী অপধারার বিরোধিতায় সব অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মী, সব গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো  হয়।

সর্বশেষ খবর