শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
মহানগরের রাজনীতি

শিগগিরই ওয়ার্ড ও থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি : রহমতউল্লাহ

রফিকুল ইসলাম রনি

শিগগিরই ওয়ার্ড ও থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি : রহমতউল্লাহ

শিগগিরই ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড ও থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপি। তিনি বলেছেন, কমিটি গঠনের জন্য উত্তরের সহসভাপতিদের আহ্বায়ক করে আটটি সংসদীয় এলাকায় আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে তাদের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল গুলশানে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এ কে এম রহমতউল্লাহ এসব কথা বলেন। তিনি সংগঠনের থানা-ওয়ার্ড কমিটি ছাড়াও সমসাময়িক রাজনীতি, সরকারের সাফল্যসহ নানা বিষয়ে সাক্ষাৎকারে কথা বলেন। মহানগর উত্তরের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আগামী মাসেই কমিটি ঘোষণা করা হবে। অতীতে যারা ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এবং আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড-থানায় দায়িত্বে থেকে সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন, যাদের ভাবমূর্তি ভালো, তাদেরকেই কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া হবে। কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসাদের স্থান দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী রয়েছেন। যাদের নানা কারণে মহানগরের কমিটিতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ওয়ার্ড ও থানা কমিটিতে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে বলে বিএনপির অভিযোগের প্রসঙ্গে এ কে এম রহমতউল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি কাকরাইলে তবলিগ জামাতের জায়গা এবং টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার জায়গা দিয়েছেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত ধর্মকে ক্ষমতায় আসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিলেও হেফাজতকে স্বীকৃতি দেয়নি। এদের সঙ্গে কোনো জোট বা আপস হয়নি। তিনি বলেন, হেফাজত এখন জঙ্গিবিরোধী কথা বলছে বলেই বিএনপির গা জ্বালা শুরু হয়েছে। কারণ ৫ মে যখন তারা মতিঝিলে অবস্থান নেন তখন ঢাকাবাসীকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিল খালেদা জিয়া। সেই হেফাজতে ইসলাম যখন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তখন তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। তিনি বলেন, আমি মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রায় প্রতিটি এলাকায় মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে এলাকার মুসল্লি ও সুধী সমাজের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে উদ্বুদ্ধ করেছি। এ ছাড়া থানা-ওয়ার্ড নেতারা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জঙ্গিবাদ দমনে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কেউ যাতে জঙ্গিবাদে না জড়ায় এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছি। বিএনপিকে মাঠে নামতে দেওয়া হয় না—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, মাঠে নামতে হলে সাংগঠনিক শক্তি ও লোকবল লাগে, যা বিএনপির নেই। তারা এসি রুমে থেকে সরকার পতনের হুমকি দেয়। কখনো রাজপথে নামতে পারে না। তারা অভিযোগ করে পুলিশ নামতে দেয় না। তারা যদি ৫-৬ হাজার লোক নিয়ে মাঠে নামে তাহলে ১০-২০ জন পুলিশ কী করবে? আসলে আন্দোলন করার মুরাদ নেই তাদের। যে কারণে তারা মিথ্যে অজুহাত খোঁজে। তিনি বলেন, ২০০১ সালের পর আওয়ামী লীগকে তারা মাঠে নামতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হতো। তারপরও আমরা আন্দোলন করেছি। রাজপথে থেকে লড়াই করেছি। কারণ আমাদের নেতা-কর্মী ছিল। তিনি বলেন, বিএনপি মাঠে নামুক—আন্দোলন করুক আমরা তাদের স্বাগত জানাব। কিন্তু তা না করে এসি রুমে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে গরম বক্তৃতা করে সরকার হঠানো যাবে না। আর তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েস পূরণও হবে না। সরকারের টানা দুই মেয়াদের উন্নয়ন জনগণের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে না—এ প্রসঙ্গে এ কে এম রহমতউল্লাহ বলেন, যেভাবে সরকার উন্নয়ন করছে, সেভাবে প্রচার নেই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, চার লেন ময়মনসিংহ-ঢাকা, চট্টগ্রাম-ঢাকা হাইওয়ের সড়ক, ফ্লাইওভার, রাস্তাঘাট অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন দৃশ্যমান হয়েছে। মানুষের মাথা পিছু আয় বেড়েছে। মৃত্যুহার কমেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারের অর্জনগুলো প্রশংসিত হচ্ছে। কিন্তু সে বিষয়গুলো প্রচারে আসছে না। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীরা যেমন দায়ী তেমনি গণমাধ্যমেরও ভূমিকা রয়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সরকারের অর্জনগুলো প্রচার করতে হবে। মিডিয়াগুলোতেও সরকারের অর্জন প্রচার করতে হবে।

সর্বশেষ খবর