শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পে নতুন সম্ভাবনা মধ্যপ্রাচ্য

উপসাগরীয় দেশে ৫০০ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানির টার্গেট

রুহুল আমিন রাসেল

পোশাকশিল্পে নতুন সম্ভাবনা মধ্যপ্রাচ্য

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এখন নতুন সম্ভাবনা হয়ে দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশসমূহ। উদ্যোক্তারা আগামী পাঁচ বছরে উপসাগরীয় দেশ কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও সৌদি আরবে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের নিট পোশাক পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। ২০২০ সালে দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল সামনে রেখে এই প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, ইউরোপ-আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দাভাবের ফলে সেখানে বাংলাদেশি পোশাক পণ্য রপ্তানি আশানুরূপভাবে বাড়ছে না। বরং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। এই সংকটে পোশাকশিল্পে নতুন সম্ভাবনা হয়ে আছে উপসাগরীয় অঞ্চল। উপসাগরীয়  দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট ‘গলফ ইকোনমিক কাউন্সিলভুক্ত দেশ বা জেসিসিতে আছে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও সৌদি আরব। জেসিসিভুক্ত দেশগুলোতে নিট পোশাক পণ্য রপ্তানির ৮০০ কোটি ডলারের বাজার রয়েছে। যার মাত্র ১০ শতাংশ বা ৮০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এমন প্রেক্ষাপটে দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে রপ্তানি বাড়াতে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন পোশাকশিল্প মালিকরা।  নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিকেএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ এইচ আসলাম সানী গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জেসিসি দেশগুলোতে শুল্ক বাধার কারণে পোশাক পণ্য রপ্তানি বাড়ছে না। এই শুল্ক বাধা দূর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে রপ্তানি ৫ বিলিয়নে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। জানা গেছে, আগামী ২০২০ সালে দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও উন্নত দেশসমূহ অংশ নেবে। আবার ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে পৃথিবীর ৪০ লাখ মানুষ অংশ নেবে। কাতারের আবহওয়া গরম হওয়ায় টি-শার্টের বিশেষ চাহিদা থাকবে। এ দুটি প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি সম্প্রসারণের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই আলোকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। এর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে এমন উদ্যোগে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে নিট ও ওভেন পোশাকের রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়াতে এবং বাজার সম্প্রসারণে ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এদিকে দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে সম্প্রতি ঢাকায় দেশ দুটির রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বিকেএমইএ। সূত্র জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের নিট পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিশাল সম্ভাবনা আছে। বিশ্বের সপ্তম তেলসমৃদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বিস্তৃত অর্থনীতির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুবাই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। আবার বৈশ্বিক যোগাযোগের গেটওয়ে হিসেবেও বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২ শতাংশ তরুণ ও মধ্য বয়সী। যে কারণে এখানে বৈচিত্র্যময় পোশাকের চাহিদা দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যমান থাকবে।

সর্বশেষ খবর