শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

হাওরে মাছের পর মরছে হাঁস

ধান পচে বিষাক্ত গ্যাস

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

হাওরে মাছের পর মরছে হাঁস

আগাম বন্যায় তলিয়ে যাওয়া হাওরের কাঁচা ধান পচে সৃষ্ট অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের কারণে কদিন আগেই মরতে শুরু করেছে সুনামগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজারের বিভিন্ন হাওরের মাছ। এবার সেই মরা মাছ ও পোকামাকড় খেয়ে এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে মরছে পোষা হাঁস। গত দু-তিন দিনে সহস্রাধিক হাঁস মারা গেছে দাবি খামারিদের। হাকালুকিতে মাছে মড়ক বন্ধে কুলাউড়া মত্স্য অধিদফতরের উদ্যোগে ছিটানো হচ্ছে চুন-ওষুধ। মত্স্য অধিদফতরের দাবি এতে অবস্থা কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং মাছ মরা বন্ধ হবে।  জানা যায়, গত শনিবার রাতে ঝড়ের পর বাতাসের সঙ্গে হাওর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে ভয়ানক দুর্গন্ধ। পরদিন থেকে হাওরে মরা-আধমরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। সেই মাছ খেয়ে এখন মারা যাচ্ছে হাঁস। হাওরে কৃষির পাশাপাশি এনজিও থেকে তোলা ঋণের টাকায় হাঁস কিনে ডিম বিক্রি করে অনেকের সংসার চালাত। সেই ঋণ এখন তাদের গলার ফাঁস হয়ে দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরে পানিতে ভাসতে থাকা মরা হাঁস বাতাসে ঠেলে আনছে কিনারায়। তা কুড়িয়ে নিচ্ছেন খামারিরা। হাকালুকি পাড়ের বাসিন্দা কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘পানিতে ধান নিয়েছে। অভাবের সংসার হাঁসের ডিম বিক্রি করে চলত। হাঁস মরে যাওয়ায় এনজিও থেকে তোলা ঋণ কীভাবে শোধ করব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার আশিঘর গ্রামের কাদিম শাহ বলেন, ‘খামারিরা হাওরে হাঁস ছাড়লে মাছ ও পোকা খেয়ে একের পর এক হাঁস মারা যাচ্ছে।’ কুলাউড়া উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, পুরোপুরি অ্যামোনিয়া গ্যাসে আক্রান্ত মরা মাছ খেয়ে হাঁসও মারা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে হাঁসের খামারিদের সতর্কতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এত বড় হাওরে যে পরিমাণ চুন ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না দুর্যোগ কাটছে এবং অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর