শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যা

অনুতপ্ত নন সুমি, ভেঙে পড়েছেন শাহাবুদ্দীন নাগরী

আলী আজম

অনুতপ্ত নন সুমি, ভেঙে পড়েছেন শাহাবুদ্দীন নাগরী

স্বামীকে খুন করেও অনুতপ্ত নন নূরানী আক্তার সুমি। পাঁচ দিন রিমান্ডে থাকার পরও তিনি অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে নিজের অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শাহাবুদ্দীন নাগরী।

গতকাল তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আবারও রিমান্ডে  নেওয়ার আবেদন করা হবে। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কবি, গীতিকার ও সাবেক কাস্টমস কমিশনার শাহাবুদ্দীন নাগরীর সঙ্গে পরকীয়ায় মত্ত সুমি তার পথের কাঁটা সরাতে স্বামীকে খুন করেন। নূরুল ইসলাম হত্যার কারণ জানতে সুমি ও নাগরীকে আলাদাভাবে এবং মুখোমুখি করেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, সুমি একাই তার স্বামীকে হত্যা করেছেন। তবে সুমির সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও অন্য কোনো তথ্য দিচ্ছেন না নাগরী। অন্ধকার জগতের নারী শাহিনের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল নাগরীর। তিনি নাগরীকে সুমি ছাড়াও অনেক মেয়ের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দেন। অঢেল টাকার মালিক নাগরী কোনো মেয়েকে ভালো লাগলেই তার পেছনে লাখ লাখ টাকা খরচ করতেন। নিজের খেয়াল-খুশি মতোই তাদের ব্যবহার করতেন। সময় কাটাতেন। ঘুরতে যেতেন। সর্বশেষ সুমিতে পাগল হন নাগরী। সূত্র আরও বলছে, সুমিকে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল নাগরীর। তাকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্যও পরিকল্পনা এঁটেছিলেন। এ জন্য সুমিকে পাসপোর্টও করে দেন। ঘরে সন্তান না থাকায় নাগরীর প্রেমে দেওয়ানা হন সুমি। নাগরীও সুমির প্রেমে দেওয়ানা হয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করেন। কিনে দেন গাড়ি। সংসারের খরচও চালাতেন। স্বামী নূরুল ইসলামের ব্যবসায়িক মন্দা, জুয়ার টাকা চাওয়া, দুর্ঘটনা এসব সুযোগ সুমি লুফে নেন। দেবদূত হিসেবে তখন দেখা দেন টাকার খনি শাহাবুদ্দীন নাগরী। তার টাকায় সবকিছু হচ্ছে জেনেও নাগরীকে কিছু বলতেন না সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম। তিনি নাগরীকে কাজে লাগাতে চেয়েছেন। নাগরীকে বেশি কাছে পেতে নূরুল ইসলামকে সরিয়ে দেন সুমি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মতলুবর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে সুমি একাই তার স্বামীকে হত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সুমি স্বামী হত্যায় অনুতপ্ত নন। তবে নাগরীকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে বেশ সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। সুমির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তিনি অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন। প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ফের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ নম্বর ডোম-ইনো অ্যাপার্টমেন্টে নিজ বাসার বেডরুমে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় পরদিন ১৪ এপ্রিল নিউমার্কেট থানায় নিহতের বোন শাহানা রহমান কাজল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় নিহতের স্ত্রী নূরানী আক্তার সুমি, তার বন্ধু শাহাবুদ্দীন নাগরী ও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর