শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্যাংক খাতের দরপতনে অস্থির শেয়ারবাজার

আলী রিয়াজ

ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে হঠাৎ ছন্দপতন হয়েছে। বছরের শুরুতে কয়েক মাস টানা চাঙ্গা শেয়ারবাজার এখন দরপতনের বৃত্তে আটকা পড়েছে। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারে একটানা দরপতনে বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এতে প্রতিদিন কমছে লেনদেন ও সূচক। সর্বশেষ সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে আড়াই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শুরুতে কয়েকমাস ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে কিছুটা দর সংশোধন হচ্ছে। তবে কয়েক ব্যাংকের ডিভিডেন্ডেরও কিছুটা প্রভাব থাকতে পারে। এরপরও দরপতন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা মার্চ মাসেও অব্যাহত থাকে। ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অনেকটা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে মার্চ শেষে অর্থাৎ তিন মাসে প্রায় ৬৮৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। চলতি মাসে টানা দরপতন দেখা দেয়ায় শেষ ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৩০০ পয়েন্ট পতন হয়েছে। সর্বশেষ ডিএসইএক্স ৫ হাজার     ৫২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৮০০ পয়েন্টে উঠেছিল। টানা পতনের কারণে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। শেয়ারবাজারে হঠাৎ দরপতনের পেছনে ব্যাংক খাতের শেয়ারকে দায়ী করছেন অনেকে। বাজার লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বছরের শুরুতে ব্যাংক খাতের শেয়ারের লেনদেনের ওপর নির্ভর করেই সূচক বেড়েছে। দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে একটি ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বেড়েছে। তিন মাসে কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ারের দর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে। এপ্রিলের শুরুতে এ খাতে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা দেখা যায়। দেখা গেছে তালিকাভুক্ত সব ব্যাংকের শেয়ারের দর হারিয়েছে। এ সময় কয়েকটি ব্যাংক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। প্রচলিত চর্চার বাইরে গিয়ে ব্যাংকগুলো ডিভিডেন্ডের পরিমাণ অনেক কমিয়েছে। এরপরেই অস্থিরতা তৈরি হয় শেয়ারবাজারে।

বেশি আলোচিত হয় ইসলামী ব্যাংকের ডিভিডেন্ড নিয়ে। ব্যাংকটি এবার সবচেয়ে কম ডিভিডেন্ড দেয়। ফলে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরও কমে যায়। তবে ব্যাংকটি নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালকদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অতিরিক্ত মূলধন সংরক্ষণ করা স্থায়ী সম্পদ পুনর্মূল্যায়নের সঞ্চিতির স্থিতি সমন্বয়, মূলধন ঘাটতি পূরণ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাংকটি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করেছে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরস্তু খান বলেন, ইসলামী ব্যাংক ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি আরও গতিশীল করতে চায়। আর্থিক ভিত্তি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণই আমাদের লক্ষ্য। আমরা ব্যাংকের মূলধন ভিত্তি আরও সংহত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, সাম্প্রতিক দরপতনে ভয়ের কিছু নেই। প্রায় তিন মাস টানা মূল্য সূচক বাড়ার কারণে এ দরপতন হচ্ছে। শিগগিরই দরপতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসা যাবে বলে মনে করি। কিছু শেয়ারের কারণে দরপতন হয়েছে।

সর্বশেষ খবর