রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য নাগরীর বন্ধুরাও জড়িত

আলী আজম

আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য নাগরীর বন্ধুরাও জড়িত

ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম খুনের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম বেরিয়ে এসেছে। এরা সুমির প্রেমিক সাবেক কাস্টমস কমিশনার শাহাবুদ্দীন নাগরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য দিয়ে বলেছে, নাগরী তার এই ব্যবসায়ী বন্ধুদের নিয়ে মাঝে-মধ্যেই আড্ডা দিতেন সুমির বাসায়। সুমির স্বামীকে হত্যার সঙ্গে নাগরীর এই বন্ধুদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এদিকে নাগরী-সুমির পাঁচ দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর হত্যায় কারা কীভাবে জড়িত সে বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। আজ তাদের আদালতে পাঠানো হবে। গতকাল মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র বলছে, ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে— এ বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এক্ষেত্রে সুমি, শাহাবুদ্দীন নাগরী, নাগরীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু জড়িত রয়েছেন। পথের কাঁটা সরাতে তারা পরস্পর যোগসাজশে নূরুল ইসলামকে হত্যা করেছেন। তদন্তের স্বার্থে ওই ব্যবসায়ীদের পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য ফাঁস হওয়ায় নাগরী চিন্তিত থাকলেও সুমি অনেকটা স্বাভাবিক। অঢেল টাকার মালিক

নাগরীর সঙ্গে পরিচয়ের পর তার কাছ থেকে বাসা ভাড়া, সংসার খরচ, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন কাজ হাতিয়ে নিয়েছেন সুমি। নাগরীও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন। তিনি সুমির অনেক সান্নিধ্যে চলে যান। কিনে দেন গাড়িও। একপর্যায়ে বিয়েরও সিদ্ধান্ত নেন তারা। তবে সুমির বাসায় অবাধ যাতায়াতে বাধা ছিলেন নূরুল ইসলাম। এ কারণেই তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। নূরুল ইসলামের ব্যবসায়িক মন্দা, দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে সুযোগ নেন সুমি। স্বামী বাসা থেকে বের হলেই ফোনে নাগরীকে বাসায় ডেকে নিতেন সুমি। স্বামী বাসায় ফেরার আগ পর্যন্ত তারা দুজনে একত্রে সময় কাটাতেন। নূরুল ইসলামের মেজো বোন হাসনা আক্তার কুমকুম জানান, আমার ভাইকে মেরে ফেলার পারমিশন তো কাউকে দেওয়া হয়নি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার জানান, শাহাবুদ্দীন নাগরী ও সুমির পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠিয়ে ফের রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে। নাগরী-সুমিসহ ওই ফ্ল্যাটের দারোয়ান, সিসিক্যামেরার ফুটেজ ও গাড়িচালক সেলিমের মাধ্যমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। গত ১৩ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ নম্বর ডোম-ইনো অ্যাপার্টমেন্টে নিজ বাসার বেডরুমে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পরদিন ১৪ এপ্রিল নিউমার্কেট থানায় নিহতের বোন শাহানা রহমান কাজল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় নিহতের স্ত্রী নূরানী আক্তার সুমি, তার বন্ধু শাহাবুদ্দীন নাগরী ও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর