মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
পরিবারের অভিযোগ

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জনিকে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহবাগে সাকুরা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারের ক্যাশ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিলেন বাবা জনি ওরফে মোহাম্মদ জনি। খাবারের বিল না দিয়ে উল্টো ক্যাশ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার কারণেই জনিকে মারধর করা হয়। তবে তাকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করা হয়নি। পুলিশের কাছে এমন বক্তব্য আটককৃত সাকুরা বারের ক্যাশিয়ার মাজহারুল ইসলাম নয়নসহ অন্য স্টাফদের। তবে এসব বক্তব্য মানতে নারাজ নিহত জনির পরিবার। তারা বলছেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জনিকে খুন করা হয়েছে। তাদের ইঙ্গিত রাজনৈতিক বিরোধ। রবিবার রাতে এ ঘটনার পর পুলিশ জড়িত সন্দেহে ৫২ জনকে আটক করেছে। তাদের শাহাবাগ থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানা গেছে, নিহত জনি ঢাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ ছাড়াও ওই ওয়ার্ডে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। শাহবাগ এলাকায় ফুলের ব্যবসা করতেন তিনি। জনি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানের রাজনগরের আবদুল কুদ্দুছের ছেলে। জনি কয়েক বছর আগে পরীবাগ এলাকায় বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর খাজা হাবিবের গাড়ি চালক সেলিম হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জামিনে ছিল জনি।

আটককৃতদের তথ্যের বরাত দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সর্দার বলেন, সাকুরা বারে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তবে এ অভিযোগে অস্বীকার করে নিহত জনির ভাই নয়ন আহমেদ দাবি করেন, জনি চাঁদাবাজ ছিল না। শাহবাগে ফুলের ব্যবসার পাশাপাশি যুবদলের রাজনীতি করত। আগামীতে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার চেষ্টা করছিল। এ কারণে জনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যুবদলের কোন্দলের জের ধরেই জনিকে খুন করা হয়ছে। হত্যাকাণ্ডে যুবদলের নেতাদের হাত থাকতে পারে। নয়ন দাবি করেন, নিয়মিত সাকুরা বারে যুবদল, ছাত্রদল ও বিএনপির লোকজনের আড্ডা চলে। রাজনৈতিক কারণেই সাকুরায় গিয়েছিল জনি। সেখানে যুবদলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। ওই সময় জনি সাকুরা থেকে বের হয়ে বাসায় যাওয়ার সময় তাকে ঘিরে ধরে যুবদল নেতারা ও সাকুরা বারে আগে থেকেই অবস্থানকারী তাদের লোকজন। এরপর বার থেকে বের হওয়ার পর রাস্তায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করে তারা। এ ঘটনায় অনেকেই জড়িত আছে। তিনি শতাধিক লোকজনকে আসামি করে মামলা করবেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে জনিকে মারতে মারতে সাকুরা বার থেকে নিচে নামাতে দেখেছেন তারা। এরপর তাকে সাকুরা বারের পার্শ্ববর্তী নিউ ভাই ভাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আজিমুল হক বলেন, এ ঘটনায় সাকুরা বারের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৫২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহত জনির বাবার নাম আবদুল কুদ্দুছ। গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, রাজনগর। বর্তমানে কল্যাণপুর ১১ নম্বর রোডের ৫২/এ নম্বর বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।

সর্বশেষ খবর