শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

গবাদিপশু পালন করে স্বাবলম্বী সাকিউল

দিনাজপুর প্রতিনিধি

গবাদিপশু পালন করে স্বাবলম্বী সাকিউল

জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে আবাদি জমি নষ্ট করে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় পার্বতীপুর উপজেলায় কৃষিখাতে কর্মসংস্থান কমলেও আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক বেকার যুবক গবাদিপশুর চিকিৎসায় যুক্ত হয়ে সচ্ছল জীবন-যাপনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। পলাশবাড়ী ইউপির মধ্যপাড়া ভোটখাট এলাকার সাকিউল      আলম গরুর খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কৃষিনির্ভর পার্বতীপুর উপজেলায় বর্তমানে শতাধিক দুগ্ধ খামার, ২৪টি ছাগলের খামার, ২৬টি ভেড়ার খামার, ১২২টি মুরগির খামার, ৪৮টি হাঁসের খামার ও ১টি বড় আকৃতির কোয়েল খামার গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া পারিবারিক পর্যায়ে দুই-তিনটি গরু নিয়ে অসংখ্য ছোটখাটো দুগ্ধ খামার প্রায় প্রতিটি গ্রামে ও প্রতিটি পরিবারে দেখতে পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রতিদিন গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি, দুধ, ডিম ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। গত বছর কোরবানির ঈদে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৪৮ হাজার গরু-ছাগল, ভেড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা। সেলিম মণ্ডল জানায়, আমার খামারে দেড় হাজার হাঁস পালন করি। এতেই স্বাবলম্বী হয়েছি। উপজেলার চণ্ডিপুর ইউনিয়নের দাড়ারপাড় গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৪০) ৪ বছর ধরে হাঁস পালন করে আর্থিক উন্নতি করেছেন। তিনি প্রতি বছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা হতে দেড় থেকে দুই হাজার ১দিন বয়সের হাঁসের বাচ্চা কিনে নিয়ে আসেন। তিন মাসে খাবারের উপযোগী হলে বিক্রি করেন। এতে খরচ বাদে প্রতি বছর তার এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। শহরের রোস্তম নগর মহল্লার আসমাউল হুসনা বলেন, তার ২০টি উন্নতজাতের ছাগল রয়েছে। ছাগল পালনের মাধ্যমে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। পলাশবাড়ী ইউপির মধ্যপাড়া ভোটখাট এলাকার সাকিউল আলম গরুর খামার করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন। এদিকে, এ বছর উপজেলায় ১৬০ জন কৃষক প্রায় ১০০ একর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর আটরাই গ্রামের আ. সামাদ আলী (৪০) ১ একর ২০ শতক জমিতে ঘাস চাষ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন ও ঘুঁচিয়েছেন বেকারত্ব। ফিরে এসেছে পরিবারে সচ্ছলতা। এখন দেখা যায় রাস্তার মোড়ে, হাট বাজারে পিক-আপ বা রিকশা-ভ্যানে করে ঘাস বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহকারী খলিলুর রহমান জানান, হরিরামপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় রয়েছে সিপি বাংলাদেশ নামে একটি লেয়ার মুরগির খামার। যেখান থেকে উৎপাদিত প্রায় ৮০ হাজার ডিম প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, একটি দেশি গাভী থেকে প্রতিদিন মাত্র ২ লিটার দুধ পাওয়া যেত। কিন্তু দেশি গাভীকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নতজাতের গাভী সহজলভ্য হওয়ায় বর্তমানে প্রায় ২৫-৩০ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। দুধ, ডিম ও মাংসের দাম বেশ চড়া হওয়ায় হাঁস-মুরগি গবাদিপশু পালন লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর