বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
চলমান রাজনীতি

রওশন রাজি, মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

রওশন রাজি, মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি

জাতীয় সংসদের প্রধানবিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ তাদের এমপিদের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার প্রশ্নে একমত হয়েছেন। এরশাদ অনেক আগেই মন্ত্রিত্ব ছাড়ার জন্য তাগিদ দিলেও রওশন এরশাদ এবারই প্রথম একমত হলেন। মঙ্গলবার দলের সংসদীয় সভায় উভয়ই একমত হয়ে যে হুঁশিয়ারি দেন তার সারকথা হলো— ‘মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দাও নইলে হবে জাপা থেকে বহিষ্কার’। পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা জানান। সূত্র জানায়, বৈঠকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা পদত্যাগের ব্যাপারে ইতিবাচক ছিলেন। অন্য দুই মন্ত্রী এখনই পদত্যাগ করতে রাজি নন। জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে আবার ক্ষমতায়ও আছে, তাদের তিনজন মন্ত্রী আছে। এই নিয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা। মঙ্গলবার রাতে জাপার সংসদীয় দলের বৈঠকে খোদ বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বিষয়টির ওপর আলোচনার সূত্রপাত করেন। বৈঠকে রওশন এরশাদ উপস্থিত তিন মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, তোমরা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ কর। তোমাদের জন্য বাইরে মুখ দেখানো যায় না। মন্ত্রিপরিষদে থাকায় জাতীয় পার্টির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তোমরা দ্রুত পদত্যাগ করবা, নইলে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে। রওশনের এমন বক্তব্যের পর পরই কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জামায়াতের দুজন মন্ত্রী ছিলেন। তারা জামায়াতকে সারা দেশে সাংগঠনিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করেছে। আপনারা তিনজন মন্ত্রী। তবুও জাপার কোনো লাভ হয়নি, বরং ক্ষতি হয়েছে। এই সময় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ অনেকটা নীরব ছিলেন, তখন জাপার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এরশাদের উদ্দেশে বলেন, স্যার জাতীয় পার্টি করলে আপনার আদেশ মানতে সবাই বাধ্য। এরশাদ বলেন, আমি তো আগেই ওদের বলেছি, মন্ত্রিসভা থেকে ব্যাক (পদত্যাগ) করতে। তাদের জন্য আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তারা এখনই পদত্যাগ করুক। আমরা যদি সত্যিকারের বিরোধী দল হতে পারি তা হলে, আগামী নির্বাচনে আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ব্যারিস্টার আসিনুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পদত্যাগের সময় এখনো হয়নি। তাছাড়া আমাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে না। অনেক এমপি সংসদে সরকারের প্রশংসা করে বক্তব্য দেয়, তাদের বক্তব্যের কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না? একই কথা বলেন মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, আমরা বের হয়ে এলে দলের লাভ হবে না, বরং ক্ষতি হবে।

সর্বশেষ খবর