বুধবার, ১০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংকট কাটেনি হাওরে, মিলছে না বিদ্যুৎ পানি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

বিশুদ্ধ খাবার পানি ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে। পানির দরে গরু বিক্রি করে দেওয়ায় গরুর গোবর না পেয়ে জ্বালানি সংকটেও পড়েছেন এলাকাবাসী। হাওরের পানি দূষিত হওয়ার পর এখন টিউবওয়েলের পানিও দুর্গন্ধ হয়ে পড়েছে। জেলার মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ হাওরের বিভিন্ন গ্রামে এখন একই সমস্যা। এদিকে, নেত্রকোনা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বলছে এলাকা চিহ্নিত করে টিউবওয়েল বরাদ্দ দেন জনপ্রতিনিধিরা, জনস্বাস্থ্যের কাজ শুধু বাস্তবায়ন করা। তবে বাড়ি ঘরে পানি না ওঠায় টিউবওয়েল নষ্ট হওয়ার তেমন খবর পাওয়া যায়নি বলেও তাদের দাবি। হাওরাঞ্চলের মল্লিকপুর, নারাইজসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আকস্মিক অকাল বন্যায় হাওরের ৭০ হাজার হেক্টর জমির কাঁচা পাকা ধান তলিয়ে যায়। ফলে হাওরের পানিও দূষিত হয়ে পড়ে। যে কারণে মাছেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এ ঘটনার পর মত্স্য এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের উদ্যোগে পানি বিশুদ্ধকরণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পানিতে এখনো পচে পচে ধান গাছ ভেসে বেরাচ্ছে। আর হাওরের পানিতে ভেসে আসা ধান গাছ সংগ্রহ করে শুকিয়ে চলছে রান্নার কাজ। বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েলগুলোর পানিও দুর্গন্ধ হয়ে পড়েছে। যে কারণে বিপাকে পড়েছেন হাওরপাড়ের মানুষ। বিশুদ্ধ পানি সংকট রয়েছে হাওরাঞ্চলের স্কুলগুলোতেও। গো-খাদ্য সংকটে পানির দরে গরু বিক্রি করায় জ্বালানিতেও বেশ প্রভাব পড়েছে।

দু-একটি গরু যাদের রয়েছে তারা দুই তিন দিনের গোবর জমিয়ে কিছুটা জ্বালানি তৈরি করে রান্নার উপযোগী করে তুলছেন বলে জানালেন মল্লিকপুর গ্রামের গৃহবধূ শংকরি ও সুজাতাসহ অনেকেই। বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহে চরম বেগ পোহাতে হচ্ছে মোহনগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রাম ছাড়াও নারাইজ, শেওড়াতলী, রাজিবপুর, মেন্দীপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষের।

মল্লিকপুর গ্রামের অনুপ তালুকদার বলেন, যেভাবে ফসল ডুবেছে গত অর্ধশত বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। একটি ধানও কৃষক তুলতে পারেনি। এখন কৃষকের পাশাপাশি গো-খাদ্য সংকটে গরুগুলোও বিক্রি করা হচ্ছে। পানিতে এখনো দুর্গন্ধ রয়ে গেছে। এ সমস্যা আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারছে না। এদিকে, নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহরাজ হোসেন বলেছেন, হাওর এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি টিউবওয়েল বা যে কোনো বরাদ্দ দেন জনপ্রতিনিধিরা। আমরা বাস্তবায়ন করি। বরাদ্দ আরেকটু বাড়িয়ে দিলে আর জনপ্রতিনিধিরা সঠিক জায়গা সিলেক্ট করলে সমস্যা থাকবে না। টিউবওয়েল নষ্টের খবর তেমন পাওয়া যায়নি। কিছু কাঁচা ল্যাট্রিন নষ্ট হয়েছে। তবে হাওরাঞ্চলে বর্ষাকালে প্রতিবছরই কিছু পানির সমস্যা থাকে।

সর্বশেষ খবর