বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

জোর করে বিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর চকবাজারে জোর করে এক কিশোরের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পরদিন তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাড়ির কেয়ারটেকার বাবুল এবং কাজীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ওই তরুণীর     লাশ গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, সে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ জানায়, শিউলী আক্তার (১৯) নামে ওই তরুণী কাজ করতেন চকবাজারে একটি পিতল কারখানায়। তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকতেন চকবাজারের ৩৬/৩ কামালবাগে। কারখানার আরেক শ্রমিক শাকিল (১৬) থাকতেন পাশের বাসায়। শাকিলের সঙ্গে শিউলী আক্তারের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। বাড়ির কেয়ারটেকার বাবুল তাদের সন্দেহ করত। এক পর্যায়ে বাবুল শিউলী আক্তারকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে শিউলী আক্তার অস্বীকৃতি জানালে বাবুল আরও ক্ষিপ্ত হন। সোমবার রাতে শিউলী আক্তারের বাবা সিরাজ উদ্দিন মাতব্বর চন্দ্রপাড়ায় ওরসে ও তার দুই ভাই কাজে যান। এ সুযোগে রাত ১টায় কেয়ারটেকার বাবুল ও তার সহযোগীরা শিউলী আক্তার ও শাকিলকেও ডেকে আনে বাবুলের বাসায়। তাদের মারধর করে বাবুল ও তার সহযোগীরা। শিউলী আক্তারের মা নার্গিস বেগম জানান, দুজনকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাবুল ও তার সহযোগীরা। এ সময় শিউলী জানায় বিয়ে দেওয়া হলে সে বিষপানে আত্মহত্যা করবে। আর শাকিলও বিয়েতে রাজি ছিল না। কিন্তু জোরপূর্বক তাদের বিয়ে পড়ানো হয়। তিনি বলেন, এত রাতে কাজী কোথায় পাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাবুল জানায় তার পরিচিত কাজী আছে। এরপর রাত ৩টায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাদের একঘরে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় শিউলী  জানায় তার অস্বস্তি লাগছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে। এরপর তাকে বাবুল প্রথমে মিডফোর্ট হাসপাতালে ও পরে দুপুর পৌনে ১২টায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে বাবুল লাশ নিয়ে যায়। ঢামেক মর্গে শিউলী আক্তারের বাবা সিরাজ মাতব্বর অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়েকে বাবুল হত্যা করেছে।

 তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের পালং উপজেলার শৈলপাড়ায়। তার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে শিউলী আক্তার বড়। চকবাজার থানার এসআই আ স ম আতিকুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে শিউলী আক্তারের মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার বাবুল, তার প্রতিবেশী শাহজাহান, মাকসুদা ও কাজী মো. জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর