বুধবার, ১৭ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

আতঙ্ক ছড়াচ্ছে চিকনগুনিয়া

ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত রোগী, সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ চিকিৎসকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আতঙ্ক ছড়াচ্ছে চিকনগুনিয়া

ভাইরাসজনিত জ্বর ‘চিকনগুনিয়া’ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে চারদিকে। প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে প্রায় ২০০-৩০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে। ২০০৮ সালের দিকে প্রথম চিকনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিললেও এবার তা মহামারী আকার ধারণ করেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকিট কাউন্টারের কর্মী জানান, প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ১৫-২০ জনের মতো রোগী আসতেন এই জ্বরের চিকিৎসা নিতে। কিন্তু হঠাৎ মে মাসের শুরুর দিক থেকে অধিকাংশ রোগীই আসেন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। অসুখের উপসর্গ শুনেই বুঝে যাচ্ছি চিকনগুনিয়ায় তারা আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের জ্বর দেখেছি কিন্তু এই চিকনগুনিয়া জ্বরে এবারই প্রথম এত মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত কর্মী তোয়েব আলী বলেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাদের অধিকাংশেরই উপসর্গগুলো একই রকম। প্রতিদিন কম করে হলেও ২০০ রোগী এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। চিকনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত লালমাটিয়ার রিয়াজ রায়হান বলেন, প্রায় ১০ দিন হলো জ্বরে পড়ে আছি। জ্বর মাঝে মাঝেই ১০৪ এ উঠে যাচ্ছে। জ্বরের সঙ্গে শরীরের গিঁটে গিঁটে প্রচণ্ড ব্যথা। কোনোভাবেই সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি না। এ রোগের ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত অসুখ। এ বছর ডেঙ্গুর চেয়েও বেশি হারে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ডেঙ্গু জ্বরের মতোই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। চিকুনগুনিয়ার মূল উপসর্গ হলো জ্বর এবং অস্থিসন্ধির ব্যথা। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখ জ্বালা করা, গায়ে লাল লাল দানার মতো রেশ, অবসাদ, অনিদ্রা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া শরীরের অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা হয়, এমনকি ফুলেও যেতে পারে। জ্বর সাধারণত ২ থেকে ৫ দিন থাকে এবং এরপর নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে তীব্র অবসাদ এবং ব্যথা জ্বর চলে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে। এ রোগে করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, চিকুনগুনিয়ার কোনো প্রতিষেধক নেই। এর চিকিৎসা মূলত রোগের উপসর্গগুলোকে নিরাময় করা। রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল খেতে দিতে হবে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। চিকুনগুনিয়ার জন্য কোনো ভ্যাক্সিন বা টিকাও নেই। তাই প্রতিরোধই হলো সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

সর্বশেষ খবর