বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
ঢাকায় টিকফার তৃতীয় বৈঠক

পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সুবিধা পাবে না বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিএসপি নিয়ে কোনো আলোচনা ছাড়াই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টিকফার তৃতীয় বৈঠক শেষ হয়েছে। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা এ বৈঠক চলে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা চাওয়া হলেও যুক্তরাষ্ট্র তা নাকচ করে দিয়েছে। টিকফার এ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ২২ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শুভাশীষ বসু। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকও অংশ নেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন দেশটির সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি মার্ক লিন্সকর্ট। বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশের পক্ষে ব্রিফ করেন বাণিজ্য, শ্রম ও পররাষ্ট্র সচিব। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ব্রিফ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, দোহা রাউন্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা চেয়েছি। বিশেষ করে পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে। এ কারণে যাতে এ খাতে শুল্ক সুবিধা দেওয়া হয় সে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জিএসপি সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, কোনো আলোচনা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক খাতে শুল্ক সুবিধা দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের সঙ্গে যেসব দেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি রয়েছে শুধু সেই দেশগুলোর পণ্যই শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা লাভ করে। যেহেতু বাংলাদেশের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি নেই সে কারণে আপাতত পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাজার সুবিধা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শুল্ক নেওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পোশাকের ওপর যে শুল্ক রয়েছে সেটি আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরাই পরিশোধ করেন। জিএসপি ইস্যুতে বার্নিকাট বলেন, এ ইস্যুর সঙ্গে শ্রম খাতের সংস্কার ও অধিকারের বিষয় জড়িত। এটি টিকফার কোনো বিষয় নয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া দেশটিতে সেবা খাতে বাংলাদেশের নার্স, মিডওয়াইফসহ আইটি বিশেষজ্ঞদের কর্মসংস্থানের সুবিধা দাবি করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের পণ্যের নায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিজিটাল ইকোনমি ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওষুধ আমদানির ওপর নিবন্ধন জটিলতা, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, সরকারি ক্রয় পদ্ধতি এবং শ্রম ইস্যুতে প্রশ্ন তোলে। বিশেষ করে গত ফ্রেব্রুয়ারিতে আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা নিয়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আশুলিয়ার ঘটনার সমাধান হয়েছে। বাকি রয়েছে শুধু মামলাগুলো। এটা বিচার বিভাগের আওতাধীন। সরকার মামলাগুলো দ্রুত সমাধানে কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর