শুক্রবার, ১৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

পোশাকশিল্পে ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা চাই

রুহুল আমিন রাসেল

পোশাকশিল্পে ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা চাই

সিদ্দিকুর রহমান সভাপতি বিজিএমইএ

আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পোশাকশিল্পের জন্য ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা চেয়েছেন মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি নতুন ভ্যাট আইনের খারাপ দিকগুলো বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেছেন, ভ্যাট আদায়ের নামে মধ্যস্বত্বভোগীদের হয়রানি থেকে ব্যবসায়ীদের মুক্তি দেওয়া হোক।

কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, ‘পোশাকশিল্প ভ্যাটের আওতামুক্ত। তার পরও আমরা মনে করি, এই বাজেটে সব রপ্তানি খাত ভ্যাটের আওতামুক্তই থাকা উচিত। ভ্যাট দেওয়া আর নেওয়ার মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগীদের যে হয়রানি, তা থেকে মুক্ত হতে চাই। মধ্যস্বত্বভোগীদের হয়রানি থেকে ব্যবসায়ীরা মুক্তি চান। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে মনে করি, ভ্যাট আইনে ভালো ও খারাপ দুটো দিকই আছে। বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন রকম ভ্যাট আছে, সেখানে আস্তে আস্তে ভ্যাট বাড়াতে হবে। একবারে ১৫ শতাংশে বাড়ানো যাবে না।’ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পোশাকশিল্প বিগত ৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্যোগময় অবস্থা পার করছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পরে এই খাতের উদ্যোক্তারা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে কারখানা ঠিক করেছেন। কিন্তু গত বছরে ডলারের অবমূল্যায়ন হয়েছে ৫ শতাংশ। ইউরোপের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। ব্রেক্সিট ও আমেরিকার নির্বাচন সব মিলিয়ে একটা টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থার মধ্যে আমাদের পণ্যমূল্য দিন দিন কমছে। অথচ খরচ গত দুই বছরে ১৮ শতাংশ বেড়েছে।’ বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘রপ্তানি খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও প্রায় ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ২ দশমিক ২১ শতাংশে ঠেকেছে। আমরা মানে ঠিকই উন্নতি করেছি, কিন্তু মূল্য কমতে কমতে এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে, আমাদের পক্ষে শিল্প চালিয়ে রাখা কষ্টকর।’ দেশের প্রধান রপ্তানি খাতের এই নেতার দাবি— ‘আমাদের যে উেস কর নেওয়া হয়, তা যেন নতুন বাজেটে আগামী দুই বছরের জন্য শূন্য হার করা হয়। করপোরেট কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। এটা বলছি এই কারণে যে, দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে না, তাই মানুষ যে যেভাবে পারুক বিনিয়োগ করুক। আমাদের দরকার বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান।’ বাংলাদেশের পোশাকশিল্প আজ জাতীয় সম্পদ উল্লেখ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পোশাকশিল্প এখন আর কারও ব্যক্তিগত সম্পদ নয়। এ শিল্প থেকে সরকার ৮২ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এর সঙ্গে ৪০ লাখ লোকের ভাগ্য নির্ধারণ হয় এই খাতে। সেবা খাতও এই পোশাকশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। সরকারও সব সময় এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কিন্তু এখন এমন পর্যায়ে পোশাকশিল্পের অবস্থা তাতে আমাদের যদি এই বাজেটে নগদ সহায়তা না দেওয়া হয়, তাহলে এই শিল্প চালিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হবে। সেজন্য শুধু বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সদস্যদের আগামী দুই বছর ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করা হোক।’

সর্বশেষ খবর