শনিবার, ২০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
চিকিৎসা সেবার হাল

প্যাথলজি খরচের উচ্চহার ঢাকা শিশু হাসপাতালে

জয়শ্রী ভাদুড়ী

শিশুদের বিশেষায়িত সেবা দিতে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা শিশু হাসপাতালে অপারেশন খরচ কম হলেও প্যাথলজি খরচের উচ্চহারে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিশু চিকিৎসার জন্য আসা অভিভাবকরা। সরকারি হাসপাতালে ইকোকার্ডিওগ্রাফি করাতে মাত্র ২০০ টাকা ব্যয় হলেও শিশু হাসপাতালে লাগে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা। বুকের এক্স-রে সরকারি হাসপাতালে ২০০ টাকার বিপরীতে শিশু হাসপাতালে ৩৫০ টাকা। সরকারি হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রামের ফি ১১০-২২০ টাকা। অথচ শিশু হাসপাতালে এজন্য নেওয়া হয় ৬০০ টাকা। এভাবে সব ধরনের সেবার ক্ষেত্রেই আগতদের বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে শিশুদের বিশেষ সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা শিশু হাসপাতাল। ৬৪০ শয্যার এই হাসপাতালে ৪০ শতাংশ শয্যা দরিদ্র এবং অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আইসিইউতেও দেওয়া হয় ফ্রি শয্যা। এই হাসপাতালে শিশুদের ওপেন হার্ট সার্জারি করানো হয় মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় যা প্রাইভেট ক্লিনিকে খরচ লাগে প্রায় ৩ লাখ টাকা। কিন্তু প্যাথলজি খরচের উচ্চহার নিয়ে বিব্রত অভিভাবকরা। সরেজমিন ঢাকা শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০টা বাজতেই রোগীদের ভিড়ে জনাকীর্ণ বহির্বিভাগ। মাইক দিয়ে ঘোষণা দিয়েও পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না দায়িত্বরত কর্মীরা। ডাক্তার দেখানো শেষে যাদের টেস্ট করানো লাগে তারা দৌড়ান নতুন ভবনের সংশ্লিষ্ট বিভাগে। কিন্তু টেস্টের খরচ দেখে অনেককেই পিছিয়ে আসতে হয়। মালিবাগ এলাকার ভ্যানচালক ইসমাইল শেখ ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। বেশ কিছুদিন ধরেই যা খাচ্ছে তাই বমি করে দিচ্ছে ছেলেটি। পেটে অসহ্য ব্যথা। ডাক্তার দেখে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে বলেছেন। কিন্তু প্যাথলজির খরচ দেখে তিনি বলেন, ৬০০ টাকা দিয়ে এই পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য যদি আমার থাকত তাহলে তো অনেক আগেই ছেলের চিকিৎসা করাতে পারতাম। কতদিন ধরে অসুখে ভুগছে ছেলেটা, পাশের বাড়ির একজনের কথায় এই হাসপাতালে এসেছিলাম। ৩০ টাকার টিকিট কেটে ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু টেস্ট করানোর এত টাকা আমার  নেই। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৮০০-৯০০ রোগী আসে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। আর এই রোগীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ২১১ জন এবং নার্স রয়েছেন ৩২২ জন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ মুয়াজ বলেন, সরকারের অল্প কিছু অনুদান এবং রোগীদের কাছে থেকে নেওয়া অল্প পরিমাণ ফি দিয়ে আমরা এই হাসপাতাল চালিয়ে নিচ্ছি। আমরা সর্বনিম্ন মূল্যে এবং দরিদ্রদের ফ্রি-তে সেবা দিচ্ছি। সরকারি সহযোগিতা বাড়লে আমরা আরও স্বল্পমূল্যে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারব।

সর্বশেষ খবর