সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ধর্মঘটে ১৬ জেলায় পণ্য পরিবহন বন্ধ

বিভিন্ন স্থানে মাল বোঝাই ট্রাক-লরি আটকে

প্রতিদিন ডেস্ক

সড়ক পথে পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধসহ সাত দফা দাবিতে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের পণ্য পরিবহন। গতকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। তবে পাঁচ দফা দাবিতে ডাকা সিলেটের পরিবহন ধর্মঘট গতকাল বিকাল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সিলেট থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে জেলা সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা বৈঠকের পর গতকাল বিকাল থেকে তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এদিন ভোর ৬টা থেকে তাদের অনির্দিষ্টকালের ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছিল।

রাজশাহী থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে সড়কপথে পুলিশের চাঁদাবাজি, ওজন স্কেলে অর্থ আদায়সহ সাত দফা দাবিতে কর্মবিরতি (ধর্মঘট) পালন করছে ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। গতকাল সকাল থেকে শুরু করে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। এতে উত্তরাঞ্চলে পণ্য পরিবহনে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। জানা গেছে, কর্মবিরতির কারণে উত্তরাঞ্চলে পণ্য পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে পণ্য নিয়ে আসতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি জানান, বন্দরে বহু পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। এ ছাড়া প্রতিদিন রাজশাহী থেকে সবজি ও মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়, কর্মবিরতির কারণে ব্যবসায়ীরা এসব পণ্য পরিবহন করতে পারছেন না।

বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, কর্মবিরতির কারণে সড়ক, মহাসড়কে ট্রাক, ট্যাংকলরি কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পণ্যবাহী ট্রাকে মালামাল উঠানো ও পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকেরা। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। এতেকরে বিভিন্নস্থানে আটকে পড়েছে মালামাল বোঝাই বহু ট্রাক ও ট্যাংকলরি।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের পণ্যবাহী পরিবহন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন ট্রাক-ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিকরা। এ কর্মসূচির ফলে জেলা ট্রাক টার্মিনালে মাল বোঝাই শত শত ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ আটকা পড়েছে। এতে করে দেশের কোনো স্থানে ধান-চাল আনা-নেওয়া করতে পারছেন না মিলাররা। নওগাঁ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, মাত্র কিছুদিন আগে পুলিশি চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে তিনি এসব অনিয়ম বন্ধে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ট্রাক শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরে পণ্যজটের সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর থেকে মালামাল দেশের কোনো স্থানে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সোনামসজিদ স্থলবন্দরের শ্রমিক সরদার মোখলেসুর রহমান জানান, ট্রাক শ্রমিকদের কারণে পণ্য পরিবহন করা না গেলেও মালামাল লোড-আনলোড স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত থেকে শতাধিক ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এ এফ এম লুতফর রহমান ফিরোজ বলেন, জেলায় ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকলেও বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশিদ ট্রাক ধর্মঘটের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, দ্রুত ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক না হলে বন্দরের ব্যবসায়ীরা পচনশীল পণ্য নিয়ে লোকসানের শিকার হবেন।

নাটোর প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে নাটোরসহ উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ সাত দফা আদায়ে কর্মবিরতি পালন করছে ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী হিরা অবিলম্বে মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি, অবৈধ যানচলাচল বন্ধ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর