বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরী হবে যশোর

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দরকার কৃষিভিত্তিক শিল্প

——— মিজানুর রহমান খান

সাইফুল ইসলাম, যশোর

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দরকার কৃষিভিত্তিক শিল্প

সরকার অল্প কিছু পদক্ষেপ নিলেই যশোরকে দেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করেন যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান। তিনি বলেন, যশোরে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল ছাড়াও রয়েছে নওয়াপাড়া নৌবন্দর। যশোরের সঙ্গে এ দুই বন্দর সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত। এ ছাড়া সড়ক ও নৌপথের মাধ্যমে যশোরের সঙ্গে খুলনার মংলা বন্দরের সংযোগ রয়েছে। যশোরের সঙ্গে সাতক্ষীরার ভোমরা ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্থলবন্দরের কানেকটিভিটিও রয়েছে। এখানে রয়েছে একটি বিমানবন্দর। যশোরের এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, যশোরের সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বেনাপোল ও কুষ্টিয়ার সড়কপথ চার লেনের হচ্ছে। সরকারের নতুন পরিকল্পনায় পদ্মা সেতু হয়ে যশোর-ঢাকা সরাসরি রেল যোগাযোগও হতে যাচ্ছে। আর খুলনা-যশোর হয়ে কলকাতার সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ তো শুরুই হয়ে গেছে। এ অবস্থায় সরকার যদি একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করে তাহলে খুব সহজেই যশোর দেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরীতে পরিণত হবে। তিনি বলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে বসুন্দিয়া ও সিঙ্গিয়ায় ভৈরব নদের পাশে রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ জায়গা খালি পড়ে আছে। এখানে সরকার ইচ্ছা করলে খুব সহজেই কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করতে পারে। মিজানুর রহমান খান বলেন, যশোরের সঙ্গে সারা দেশের এই সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলে শিল্পায়নের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে অর্থনৈতিক জোন তৈরি করতে হবে। যশোরের ওপর দিয়ে গ্যাস নিয়ে খুলনায় শিল্প-কলকারখানায় দেওয়া হচ্ছে। এ গ্যাস যাতে যশোরের শিল্প কল-কারখানাগুলো পেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, যশোর বিসিকে উদ্যোক্তারা জায়গা পাচ্ছেন না। বিসিকের জায়গা অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি করা দরকার। যশোরের ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে বহুদিন ধরে দাবি করে আসছেন। মিজানুর রহমান খান বলেন, দেশে উৎপাদিত মোট সবজির বড় একটা অংশই যশোরে উৎপাদিত হয়ে থাকে। কেবল শীতকাল নয়, বারো মাসই এ জেলায় প্রচুর পরিমাণে নানা রকমের সবজি উৎপাদিত হয়। সবজি উৎপাদন বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। তাই এ জেলায় কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা খুব জরুরি। এ ব্যাপারে শিল্পোদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা করা গেলে কৃষকরা যেমন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন, তেমনি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদে সবজি সংরক্ষণের জন্য বিশেষায়িত হিমাগার তৈরি করতে হবে। নানা কারণে বেসরকারি উদ্যোক্তারা এ ধরনের হিমাগার তৈরিতে উৎসাহিত হন না। তাই এ ব্যাপারে সরকারকেই সরাসরি পদক্ষেপ নিতে হবে। মিজানুর রহমান খান বলেন, দেশের হ্যাচারিগুলোতে যে পরিমাণ রেণু পোনা উৎপাদিত হয়, এর ৭০ শতাংশই জোগান দেন যশোরের হ্যাচারি মালিকরা। মাছ উৎপাদনেও এ জেলা অনেক এগিয়ে।

 দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা ফুলের ৭০ শতাংশই জোগান দেন যশোরের ফুলচাষিরা। রেণু পোনা উৎপাদক, সবজিচাষি ও ফুলচাষিদের যদি সরকারিভাবে আরও সহযোগিতা করা যায়, তাহলে এসব পণ্য যশোর থেকে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।

সর্বশেষ খবর