বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাগরপাড়ের ইফতারি

রাহাত খান, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)

সাগরপাড়ের ইফতারি

বঙ্গোপসাগর-তীরবর্তী দেশের সর্বদক্ষিণের কুয়াকাটার ইফতারি একটু অন্যরকম। আসরের নামাজের পরপরই এখানে দুই ধরনের লোক ইফতারের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা চিরাচরিত ছোলা বুট, পিয়াজু, আলুর চাপ, বেগুনি, খেজুর, বুরিন্দা, জিলাপি, মুড়ি এবং ইসবগুলের ভুসি ও আখের গুড়ের শরবত দিয়ে ইফতার করেন। আর পর্যটকরা কেউ ইফতার করেন হোটেল-মোটেলে, কেউ রেস্টুরেন্টে আবার কেউ ইফতার করেন একেবারে সমুদ্রসৈকতে। পর্যটকদের ইফতারিতেও থাকে খেজুর, ছোলা বুট, পিয়াজু, আলুর চাপ, বেগুনি, আপেল, জিলাপি, মুড়ি, ডাব, আমসহ নানা ফল। স্থানীয় কিংবা পর্যটকদের ইফতারিতে কুয়াকাটার স্থানীয় জাতের বিভিন্ন ধরনের আম, আমরুজ, লেবু, লিচু, পেঁপে, ডাব, ডৌয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের বেশ কদর রয়েছে। বিষমুক্ত আমসহ স্থানীয় জাতের এসব ফল স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। দামও সাধারণের ক্ষমতার মধ্যে। পর্যটক বিশ্বাস মহসিন বলেন, সাগরপাড়ের ইফতারি-সামগ্রী অনেকটা বিষমুক্ত হলেও দাম তুলনামূলক বেশি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অতিমুনাফার চিন্তা-চেতনা থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেননি। এ কারণে কুয়াকাটার দুর্নাম ছড়িয়েছে সারা দেশে। মো. মিন্টু নামে আরেক পর্যটক বলেন, কুয়াকাটার স্থানীয় জাতের বিষমুক্ত আম ইফতারিতে বেশ কার্যকর। স্থানীয় জাতের এসব আমের দামও বাজারে প্রচলিত আমের চেয়ে কম। তবে অন্যান্য ইফতারি-সামগ্রীর দামে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে তার। তবে স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী অলিউল ইসলাম বলেন, তারা কোনো পণ্যের দাম বেশি নিচ্ছেন না। কুয়াকাটায় পণ্য পরিবহনে অন্য যে কোনো স্থানের চেয়ে খরচ তুলনামূলক বেশি। তাই পণ্যের দামও একটু বেশি। মো. সেলিম নামে এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বলেন, সাধারণত রমজানে কুয়াকাটায় তেমন পর্যটক থাকে না। এর ওপর ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র ভীতির কারণে বলতে গেলে পর্যটকশূন্য সাগরকন্যা কুয়াকাটা। তারা যতটুকু ইফতারি-সামগ্রী তৈরি করছেন, তার কিছু অংশের ক্রেতা পর্যটকরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরাই তাদের ইফতারির মূল ক্রেতা। মহিপুর থানার এএসআই সঞ্জয় কুমার জানান, রমজানে কেউ যাতে ভেজাল খাবার-সামগ্রী বিক্রি কিংবা অতি মুনাফা না করতে পারে সেজন্য তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর