মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাগর পাহাড়ে মিতালি মেরিন ড্রাইভে

আয়ুবুল ইসলাম, কক্সবাজার

সাগর পাহাড়ে মিতালি মেরিন ড্রাইভে

সাগর আর পাহাড়ে মিতালি। এমন ভালোবাসার মাঝ দিয়েই চলে গেছে ৮০ কিলোমিটার নয়নাভিরাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক। বিশ্বের দীর্ঘতম সাগরপাড়ের পথ। কক্সবাজারের এই দীর্ঘ সড়কটি দেখার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সড়ক দেখতে এসে উপভোগ করছেন নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। সড়কের একপাশে নীল জলরাশির বিশাল সমুদ্র, অন্য পাশে সবুজায়ন পাহাড়। সমুদ্র আর পাহাড়ের মিতালির মাঝে দাঁড়িয়ে পর্যটকদের এই ভ্রমণ হয়ে উঠেছে রোমাঞ্চকর।  ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালিয়ে ৮০ কিলোমিটারের এই মেরিন ড্রাইভ সড়ক অতিক্রম করতে সময় লাগে মাত্র ৬০ মিনিট থেকে ৭০ মিনিট। মেরিন ড্রাইভ সড়কের মাধ্যমে কক্সবাজারে বিশ্ব পর্যটনের নতুন দ্বার খুলেছে। কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোন কলাতলী থেকে টেকনাফ সাবরাং অর্থনৈতিক জোন পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটারের এই সড়কের রোমাঞ্চকর ভ্রমণ প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণ করবে। সড়কের সমুদ্র পাশে দেখা যাবে সাগরলতা ফুল, সারি সারি ঝাউবীথি, নুড়িপাথর, শামুক, ঝিনুক। আর সড়কের পাহাড় ভিউতে দেখা যাবে নারকেল গাছ, সুপারি গাছ, শিমুল গাছ, পলাশ গাছ, কৃষ্ণচূড়া. উলদ, বনজ গাছপালা ও বিভিন্ন লতাপাতা। পাহাড় আর সাগরের মিতালির অপূর্ব দৃশ্য ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এই সড়কটি। সড়কের একপাশে উঁচু পাহাড়ে সবুজের হাতছানি। অপর পাশে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে। এই দুইয়ের বুক চিরে মাঝখানে নদীর মতো এগিয়ে গেছে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি। সাগরতীর আর পাহাড়ের পাদদেশে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাস্তব চিত্রটি এ রকমই। কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে টেকনাফের সাবরাং অর্থনৈতিক জোন পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণে সময় লেগেছে ২৪ বছর। ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়ন।  প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪০ কোটি টাকা। ১৯৯৩ সালে তত্কালীন সরকারের আমলে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। কক্সবাজার শহরের কলাতলী পয়েন্টে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারের নির্মিত দুই কিলোমিটার সড়ক সাগরেই বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে এই সড়কের নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটির দৈর্ঘ্য বেড়ে ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। তিন ধাপে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথম ধাপে ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর