মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

নৌকার দুই প্রার্থীর প্রতিপক্ষ পাপিয়া

মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

নৌকার দুই প্রার্থীর প্রতিপক্ষ পাপিয়া

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেরই সম্ভাব্য প্রার্থীদের (আসন ৪৩, ৪৪ ও ৪৫) দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি একটি আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরও তৎপরতা দেখা যায়। জামায়াত অবশ্য দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না। তাদের নির্বাচন করতে হলে স্বতন্ত্র বা ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহার করতে হবে।

জামায়াত-বিএনপি অধ্যুষিত এই জেলার তিনটি আসনই স্বাধীনতার পর থেকে তাদের দখলে ছিল। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হন। এ জেলার তিনটি আসনেই ভোটযুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে কার্যত আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দুই প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস এমপি ও সাবেক এমপি  মো. জিয়াউর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক এমপি আসিফা আশরাফী পাপিয়ার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনটিতে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এ এলাকাটিতে বিএনপি-জামায়াতের রয়েছে শক্ত অবস্থান। জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণার সময় শিবগঞ্জ এলাকায় তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা কর্মীদের বিপদের মুখে রেখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। ওই সময় সহিংসতায় ৯ জন

প্রাণ হারান। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন কানসাট আন্দোলনের নেতা মো. গোলাম রাব্বানী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। একপর্যায়ে ক্ষুদ্র স্বার্থ নিয়ে দলের অন্য নেতারা গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ৪ থেকে ৫টি গ্রুপ। ঐক্যবদ্ধ না হলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. গোলাম রাব্বানীর পাশাপাশি সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ এনামুল হক এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির দুজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। একজন হলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক হুইপ অধ্যাপক শাহজাহান আলী মিয়া। অন্যজন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মো. আলাউদ্দিন টিপু ও মো. নজরুল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। জাসদ (নুরুল আম্বিয়া) থেকে আবদুল আজিজ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। এ ছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য মো. জিয়াউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মো. আফসার আলী, নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাদের ও ভোলাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. আশরাফুল আলম চুনু ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দৌড়ঝাঁপ করে চলেছেন। এর আগে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন পাপিয়া। এ ছাড়াও বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় যুবদলের অর্থ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে পৌর আমির ডা. মফিজ ও নাচোলের থানা আমির ইয়াহিয়া খালেদের নামও আলোচনায় রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আবদুল ওয়াদুদই দলীয় প্রার্থী হতে পারেন। এ ছাড়াও সাবেক সচিব আমিনুর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিনও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী  হিসেবে  দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব  হারুন অর রশিদ নির্বাচন করবেন এটা অনেকটাই নিশ্চিত। এ ছাড়া জামায়াত দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে না পারলেও ঢাকা মহানগর জামায়াত নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল কিংবা স্থানীয় জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. একরামুল হক ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম সোনা এবং জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মনিরুজ্জামান মনিরের নাম শোনা যাচ্ছে।

♦ আগামীকাল : নওগাঁর প্রার্থীদের তৎপরতা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর