শনিবার, ২৪ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
বাজার দর

সেমাই দুধ মসলার দাম চড়া

মোস্তফা কাজল

ঈদের আগে রাজধানীর বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বাজারে সেমাই, প্যাকেটজাত দুধ, পোলাও চাল ও মসলার দাম বেড়েছে। গতকাল এসব পণ্যের বেচা-বিক্রিও ছিল জমজমাট। সেমাইয়ের কদর ছিল সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও মাছ, মাংস, শসা, টমেটো, ধনে পাতা, লেবু ও কাঁচামরিচ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। সবজির বাজার এক সপ্তাহ ধরেই স্থির রয়েছে। রাজধানীর মিরপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ আয়োজনের অন্যতম পণ্য সেমাইয়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত ব্র্যান্ডের সেমাই কেজিপ্রতি ১৫ টাকা ও খোলা সেমাই কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বনফুল ও কুলসুন ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাইয়ের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। ক্রেতাদের অভিযোগ এ সেমাইয়ের দাম কয়েক দিন আগেও ছিল ৪০ টাকায়। ইগলু ব্র্যান্ডের ২৫০ গ্রাম ওজনের প্যাকেটজাত লাচ্ছা সেমাই ৫ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখন সাধারণ মানের খোলা সেমাইয়ের কেজি ৬০ টাকা। কিছুটা ভালোমানের সেমাইয়ের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সেমাই সুস্বাদু করতে দুধ ও কিশমিশের ব্যবহার করা হয়। এসব পণ্যের দামও গত তিন দিনে আরেক দফা বেড়েছে। ৪০০ গ্রাম ওজনের ডানো দুধের দাম ১৫ টাকা বাড়িয়ে ২৯৫ টাকায়, মার্কস দুধ ১০ টাকা বেড়ে ২৬৫, ফ্রেশ দুধ ৮ টাকা বেড়ে ২৪৫, ডিপ্লোমা ৫ টাকা বেড়ে ২৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানিগুলো রমজানের আগেই আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দামের অজুহাতে একদফা দাম বাড়িয়ে ছিল। এখন ঈদের বাড়তি চাহিদার কারণে আরেক দফা দাম বাড়িয়েছে। এ ছাড়া মিল্ক ভিটা, আড়ংসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের তরল দুধও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এক লিটারের দুধ ৬২, আধা লিটার ৩২ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বেশিরভাগ দোকানে প্রতি লিটার ৮০ টাকায় ও আধা লিটার ৩৫-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদে মসলার চাহিদাও বেশি থাকে। এ সুযোগে বিক্রেতারাও দাম বাড়িয়ে দেন। প্রতি কেজি কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ভালোমানের এলাচের কেজি এক হাজার ৮০০ থেকে এক হাজার ৯০০ টাকা এবং কিছুটা নিম্নমানের এলাচ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনির কেজি এখন ৪০০ টাকা। আলুবোখারা পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। দোকানিরা লবঙ্গ বিক্রি করছেন এক হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে। প্রতিটি জয়ফল বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়। আর কাঠবাদামের কেজি এখন এক হাজার ৫০০ টাকায় ঠেকেছে। এক কেজি তেজপাতার দাম ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়।ঈদ সামনে রেখে আদা ও পিয়াজসহ কিছু উপকরণের দাম বেড়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা পিয়াজ প্রতি কেজি ২০ থেকে ২২ টাকায়, দেশি পিয়াজ ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চীনা আদার কেজি ১৭৫-১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০-২০০ টাকায়। তবে দেশি রসুন ৮০ থেকে ৮৫ টাকা আর চীনা রসুন ২৬০ থেকে ২৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি বাজার অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ঈদের কারণে শসা ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৪৫ টাকা হয়েছে। ৩৫ টাকার টমেটো গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, কাকরোল, ঢেঁড়সসহ কয়েকটি সবজি গড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর ও করল্লা ৪০ টাকা ও বেগুন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঈদ বাজারে মাছের চাহিদা বেশি থাকায় প্রতি কেজিতে গড়ে ৫০ টাকা বেড়েছে। তবে ইলিশের দাম বেড়েছে বেশি। মাঝারি আকারের (৫৫০ থেকে ৭৫০ গ্রাম) একটি ইলিশ তিন দিন আগে ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ৩৫০ ও কাতলা ৪০০ টাকায়, বোয়াল, আইড়, কোরাল ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে মাংসের দামও। সিটি করপোরেশন গরুর মাংস কেজি প্রতি ৪৭৫ টাকা বেঁধে দিলেও অনেক বিক্রেতাই মাংস বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায়। রমজানের শুরু থেকে দেশি ও ব্রয়লার মুরগি চড়া দামে বিক্রি হলেও সেই দাম কমেনি। গতকাল আবার দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১৬০-১৬৫ টাকা হয়েছে। লেয়ার মুরগি ১৬০ থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা ও প্রতিটি এক কেজি ওজনের দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়। অন্যান্য পণ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর