শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার সেই উপদেষ্টার কারাদণ্ড মার্কিন আদালতে

প্রতিদিন ডেস্ক

এবার আর রেহাই পেলেন না খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ সরদার সাদী ওরফে সর্দার ফারুক (৪২)। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওরল্যান্ডোতে অবস্থিত মিডল ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্ট সাদীকে চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। ২৭ জুন বিচারপতি গ্রেগরি এ প্রেসনেল এই রায় দেন। একই সঙ্গে সাদীকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। খবর এনআরবির।

ফেডারেল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল সাদীর ২৮তম গ্রেফতার। চেক জালিয়াতি, ব্যাংকের সঙ্গে প্রতারণা, বিভিন্নজনের সঙ্গে ঠকবাজি ইত্যাদি মামলায় এর আগে ২০০৯ সালের ৫ মার্চ একই আদালতে সাদীর ৪০ মাসের কারাদণ্ড হয়। এ দণ্ড ভোগের পর তাকে পাঁচ বছরের সুপারভাইজড রিলিজে (কর্তৃপক্ষের নজরদারি) তথা প্রবেশনে থাকার অনুমোদন দেয় আদালত। সর্বশেষ মামলায় প্রবেশনের বিধি চরমভাবে লঙ্ঘনের জন্য সাদীকে ১৭ মে গ্রেফতার করা হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল হিল থেকে এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বিএনপির পক্ষে ভুয়া বিবৃতি তৈরির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় বিব্রত বিএনপি নেতাদের চাপে সাদীসহ দুজনকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং বিদেশবিষয়ক বিশেষ দূতের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশবিষয়ক উপদেষ্টার পদ থেকে অপসারণের পরও মার্কিন প্রশাসনে দেনদরবারের সময় সাদী নিজেকে ‘বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ফরেন অ্যাডভাইজার অ্যান্ড স্পেশাল এনভয়’ হিসেবে পরিচয় দেন। প্রতারণামূলকভাবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ক্যাপিটল হিল, জাতিসংঘে এসব পরিচয় উপস্থাপনের কিছু ডকুমেন্ট আদালতে নথিভুক্ত রয়েছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মার্চে প্রদত্ত ৪০ মাসের দণ্ডসহ সাদীকে ২ লাখ ৩৪ হাজার ২২৯ ডলার ৭৫ সেন্ট জরিমানা করা হয়। বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে এ অর্থ সাদী আত্মসাৎ করেন বলে আদালতে স্বীকার করেছেন। সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন সর্দার জাহিদ ফারুক ওরফে সাদী। যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন ১৯৯৬ সালে। সরকারের ইস্যুকৃত ভিসায় তিনি নিউইয়র্ক হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। এর পরই ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডোতে বসতি গড়েন। সেখানেই তিনি মার্সিয়া পবেল নামে এক বিদেশিনীকে বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তার নাম সারাহ পবেল ফারুক। তাদের সম্পর্কের যবনিকাপাত ঘটে ২০০৮ সালে তালাকের মধ্য দিয়ে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, জাহিদ এফ সর্দার সাদী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত করতে নানা চক্রান্ত ও চুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংকো পপুলার পর্টোরিকো, ব্যাংক অব আমেরিকা, ফিফথ থার্ড ব্যাংক, ওয়াকোবিয়া ব্যাংক, ওয়াশিংটন মিউচুয়াল ব্যাংক, সান ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট প্রায়রিটি ব্যাংক ও আরবিসি ব্যাংক। প্রসঙ্গত, সাদী ইতিপূর্বে নানা ধরনের প্রতারণা, জালিয়াতির মামলায় ২৭ বার গ্রেফতার হন। প্রতিবারই ছোটখাটো শাস্তি হয় তার।

সর্বশেষ খবর