শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
লন্ডনে অগ্নিকাণ্ড

বাংলাদেশি মা-মেয়ের লাশ শনাক্ত

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ২৪ তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ বাংলাদেশি পরিবারের দুজনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন রাবেয়া বেগম (৬৪) ও হাসনা বেগম (২২)। তারা সম্পর্কে মা-মেয়ে।

গত বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার করোনার কোর্টে (মৃত্যুর কারণ বিষয়ে যেখানে শুনানি হয়) এই দুজনের লাশ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।

করোনার শুনানিতে ফিয়োনা উইলকক্স বলেন, আগুনে তাদের মৃত্যু হয়েছে। দাঁতের ডিএনএ পরীক্ষা করে তাদের লাশ শনাক্ত করা হয়। শুনানিতে আরও বলা হয়, ১৭ তলার লিফটের কাছে লবিতে হাসনা বেগমের লাশ পাওয়া যায়। আর তার মা রাবেয়া বেগমের দেহ ছিল একই তলায় তাদের ফ্ল্যাটে। এই পরিবারের আরও তিনজনের বিষয়ে এখনো কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী এই পরিবারের আত্মীয় আতীক রহমান গতকাল বলেন, ওই পরিবারের বেঁচে যাওয়ার একমাত্র সন্তান আবদুল হাকিম স্বজনদের লাশ শনাক্তের বিষয়টি তদারক করছেন। শনাক্ত হওয়া দুটি লাশ এখনো পরিবারের কাছে দেওয়া হয়নি। অন্য সদস্যদের মৃতদেহের অপেক্ষায় আছেন আবদুল হাকিম। পরিবারের নিহত সব সদস্যকে একসঙ্গে দাফনের ব্যবস্থা করতে চান তিনি। বুধবার মোট নয়জনের মৃতদেহ নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যাদের কেউ কেউ ধোয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন, আবার কেউ জান বাঁচতে ছোটাছুটি করতে গিয়ে আঘাত পেয়ে মারা গেছেন। গত ১৪ জুন লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। গ্রেনফেল টাওয়ারের ১৮ তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কমরু মিয়া (৯০), তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৬৫), ছেলে আবদুল হানিফ (২৯) ও আবদুল হামিদ (২৬) এবং মেয়ে হাসনা বেগম ওরফে তানিমা (২২)। তারা সবাই আগুনে আটকা পড়েন। কমরু মিয়ার পৈতৃক নিবাস মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আকাইলকুড়া ইউনিয়নের কৈশাউড়া গ্রামে। এর আগে গত সোমবার লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে হাসনা বেগম ও রাবেয়া বেগমের লাশ শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তখন এ বিষয়ে কিছুই জানে না বলে দাবি করা হয়।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, এ পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যুর বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছে। তবে চলতি বছরের মধ্যে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে তারা। গ্রেনফেল টাওয়ারের ১২০টি ফ্ল্যাটে ছয় শতাধিক লোক বসবাস করতেন বলে ধারণা। স্থানীয় কেনসিংটন অ্যান্ড চেলসি কাউন্সিলের কাছে ওই ভবনের বাসিন্দাদের তালিকা থাকলেও তা তারা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। প্রতিবেশী ও ভুক্তভোগী স্বজনেরা বলছেন, নিহতের সংখ্যা পুলিশের দেওয়া ধারণার চাইতে অনেক বেশি হবে। তাই ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

সর্বশেষ খবর