শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

বায়োচার ব্যবহারে কম খরচে অধিক ফলন

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বায়োচার ব্যবহারে কম খরচে অধিক ফলন

পরিবেশ বান্ধব বায়োচার পদ্ধতি ব্যবহারে ধানের জমিতে কম খরচে অধিক ফলন কৃষকদের অধিক লাভবান করবে। বিশেষ ধরনের চুলায় বা ৫০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পোড়ানো কাঠ কয়লা জমিতে ব্যবহারই বায়োচার বলা হয়। বায়োচার জমিতে একবার ব্যবহার করলেই দীর্ঘসময় আর ব্যবহার করতে হয় না। বায়োচার ব্যবহারে সার ও পানি সেচ কম দিতে হয়; ফলে কৃষকের খরচ কমে যায়। পরিবেশবান্ধব এ বায়োচার পদ্ধতি ব্যবহারে জমির ফলনও বৃদ্ধি পায়। কৃষকদের বায়োচার ব্যবহারে উৎসাহী করে তুলতে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থা সিসিডিবি’র উদ্যোগে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্লটে বিআর-২৯ ধান চাষ করে এতে দেখা গেছে বায়োচার ব্যবহারে ফসলের ফলন প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। বায়োচার সম্পর্কে সিসিডিবি’র নবাবগঞ্জের মার্কেট ফ্যাসিলেটর গোলাম আজম জানান, সিসিডিবির বিশেষ ধরনের চুলা আমাদের ফোরামের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ৫০০ টাকা দিয়ে ফোরামের সদস্য হওয়া যায়। সদস্য হলে তাকে ৩ দিনের ট্রেনিং ও চুলা ব্যবহার সম্পর্কে বলা হয় এবং একটি চুলা দেওয়া হয়। এ চুলায় রান্নার পাশাপাশি বায়োচার তৈরি করে কৃষকদের কাছে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে। এ বায়োচার আলু , সবজি চাষ ছাড়াও ধানের ক্ষেতেও ব্যবহার হচ্ছে। বায়োচার রিসার্চ সুপারভাইজার হাবিপ্রবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহ্ মইনুর রহমান জানান, বিশেষ ধরনের এ চুলার পোড়ানো কাঠ কয়লা নিয়ে গুঁড়া করে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এই কয়লা জমিতে পানি এবং সার ধরে রেখে গাছের পুষ্টি জোগায়। ফলে জমিতে সার এবং পানি কম লাগায় কৃষকের খরচ কমে যায়। আর পুষ্টি বেশি পাওয়ায় গাছের ফলন বৃদ্ধি পায়। এক কেজি কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ৮০০ গ্রাম কয়লা পাওয়া যায়। ৫০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পোড়ানো কয়লা এ কাজে লাগবে। এক হেক্টর জমিতে সাধারণত ৫ টন ফসল উৎপাদন হয় কিন্তু বায়োচার ব্যবহারে ফলন প্রায় ৮-১০ টন উৎপাদন হবে। বায়োচার ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষকদের কাছে জনপ্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্লটের উৎপাদিত ধান কর্তন করা হয়েছে। এতে ফলন প্রায় দ্বিগুণ উৎপাদন হয়েছে। ধান কাটার সময় রিসার্চ সুপারভাইজার মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহ্ মইনুর রহমান ছাড়াও নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, সিসিডিবি’র কর্মকর্তা মো. গোলাম আজম, ইস্টিভান হেমরোং, অ্যাডওয়ার্ড সরেন, বিনোদ মরমু, ফারুক মিয়া, মজনু হক, গবেষণা সহযোগী মো. রায়হানুল হক, কৃষক প্রতিনিধি মোছা. দৌলতুননেছা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর