শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় সবার চোখ ইনু-হানিফের দিকে

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় সবার চোখ ইনু-হানিফের দিকে

জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ একই জোটের রাজনীতি করলেও কুষ্টিয়ায় তারা পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী। এই দুই নেতা পৃথক আসনের এমপি, তবে একই আসনের বাসিন্দা। কুষ্টিয়ার রাজনীতিতে প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে তাদের মধ্যে একটা অপ্রকাশ্য প্রতিযোগিতা আছে। স্বাভাবিকভাবেই কুষ্টিয়ার মানুষের দৃষ্টি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের দিকে। আগামী নির্বাচনে ভাগ্য পরীক্ষা হতে পারে তাদের। জোটের ভোট হলে দুজন আলাদা আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবুও মানুষের মাঝে কৌতূহল এই  দুই নেতা জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবেন, নাকি কোনো নতুন মুখ আসবে।

একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন ঘিরে অন্যান্য স্থানের মতো কুষ্টিয়ার রাজনীতিকরাও নড়েচড়ে বসেছেন। নানা কায়দায় প্রচার চালাচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পাড়া মহল্লায় ঈদ শুভেচ্ছা সংবলিত রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন সাঁটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছেন তারা। কেউ কেউ ইফতার রাজনীতি ও গরিব-দুঃখীদের মধ্যে কাপড় বিতরণ করে আলোচনায় এসেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার চারটি আসনেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কুষ্টিয়ায় সংসদীয় আসন চারটি।

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে মনোনয়নের দৌড়ে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর শক্ত প্রতিপক্ষ সাবেক এমপি দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া এ আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আ ক ম সরোয়ার জাহান বাদশা প্রার্থী হতে চাইছেন। এ আসনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু প্রার্থী হতে চান। এ ছাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলতাব হোসেনও মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ১৪-দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হতে পারেন। একই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তবে জোটবদ্ধ নির্বাচনের কারণে গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ আসনে হানিফ ও ইনুর অনুগতদের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা লড়াই আছে। আগামী নির্বাচনে হাসানুল হক ইনু নৌকার প্রার্থী হলে তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন মাহবুব-উল আলম হানিফের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন। এ আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বিএনপির প্রার্থী হতে চান। এ আসনে জাতীয় পার্টির (জাফর) আহসান হাবিব লিংকন প্রার্থী হতে পারেন।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এবারও দলের মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন  বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। তবে বিএনপি নেতা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শিল্পপতি প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামীমুল হাসান অপুও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। 

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, বর্তমান এমপি আবদুর রউফ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, সাবেক এমপি সুলতানা তরুণ, খোকসা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বিটু, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন জাফর। এ আসনে জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী ও বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম আনছার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

♦ আগামীকাল : চুয়াডাঙ্গার প্রার্থীদের খবর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর