শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

গাড়ি জব্দ করায় নিজের গায়ে আগুন দিল অটোরিকশা চালক

সাভার প্রতিনিধি

গাড়ি জব্দ করায় নিজের গায়ে আগুন দিলেন অটোরিকশা চালক। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। অটোরিকশা চালক মো. শামীম সিকদার (৩৫) আশুলিয়ার নরসিংহপুরে স্ত্রী ও শিশু সন্তানদের নিয়ে মান্নান মিয়ার বাড়ি ভাড়া থাকেন। নিজের শেষ সম্বল দিয়ে কিস্তিতে কিনেছেন একটি অটোরিকশা। পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হতো এটি চালিয়ে। গতকাল দুপুরে মহাসড়কে আসার কারণে পুলিশ তার রিকশার ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়। অনেক কাকুতি-মিনতি করেও পুলিশের কাছ থেকে রিকশাটি ছাড়াতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে কেরোসিন ঢেলে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার   ভাইজোড়া গ্রামের শাজাহান সিকদারের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গতকাল দুপুরে অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাত্রী নিয়ে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে পৌঁছান শামীম। এ সময় মহাসড়কে কর্তব্যরত সার্জেন্ট আমিনুর রহমান ও ট্রাফিক সদস্য মহাসড়কে অটোরিকশা চালানোর অপরাধে তার ব্যাটারি খুলে নিয়ে যান। পরে ব্যাটারি ফেরত দেওয়ার জন্য ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তার কাছে দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তার কাছে দুই হাজার টাকা না থাকায় তিনি ওই ট্রাফিক পুলিশের পায়ে ধরে অনুরোধ করতে থাকেন। অনেক কাকুতি-মিনতি করেও নিজের শেষ সম্বল রক্ষা করতে না পেরে অবশেষে সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই হাতে কেরোসিনের বোতল নিয়ে ফিরে আসেন। এ সময় নিজের শরীর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেওয়ার কথা জানালেও কর্তব্যরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশের একটুও সহানুভূতি মেলেনি। অবশেষে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কে প্রকাশ্যে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন অটোচালক। এতে তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের প্রায় ২৫ শতাংশ পুড়ে যায়। স্থানীয়রা ও পুলিশ পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ শাফিউর রহমান মিজান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ ঘটনায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের কোনো গাফিলতি আছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া ওই চালকের চিকিৎসার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর