সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
চিড়িয়াখানার হালচাল ২

ভালোবাসার বন্ধনে আফ্রিকান সিংহ দীপ দীপালির সংসার

মোস্তফা কাজল

ভালোবাসার বন্ধনে আফ্রিকান সিংহ দীপ দীপালির সংসার

ভালোবাসা আর মমতার বন্ধনে জমে উঠেছে সিংহ দম্পতি দীপ ও দীপালির সংসার। নিজ আবাসস্থল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার বনভূমি ছেড়ে ২০০৯ সালে লোহার খাঁচায় বন্দী হয় তিন বছর বয়সী সিংহ শাবক দীপ। এরপর পাশাপাশি রাখা হয় দীপালিকে। দেড় বছর পর জীবনসঙ্গী হিসেবে সিংহ দীপ ও সিংহী দীপালিকে একই  খাঁচায় রাখা হয়। সংসার গড়ার শুরুতেই কলহে জড়িয়ে পড়ে নবদম্পতি। তাই দীপ-দীপালির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তবে এক পর্যায়ে তাদের মনের মিল শুরু হয়।  কয়েক দিন আগে লোক চক্ষুর অন্তরালে দীপ-দীপালির জীবনে আসে মধুর সেই মুহূর্ত। উভয়ের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে চিড়িয়াখানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা খুশিতে আটখানা। নতুন অতিথির আগমন ঘোষণা হবে নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম হলে। এমন কথা বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে জানালেন কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম। বলেন, আমরা যথাযথভাবে দেখভাল করছি। নেওয়া হয়েছে বাড়তি পরিচর্যা।

জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, বৈরী আবহাওয়া, খাঁচায় বন্দীজীবন আর শক্ত থাবা দিয়ে শিকার ভাগিয়ে আনতে না পারার অক্ষমতায় ধীরে ধীরে একে অপরের প্রেমে পড়ে সিংহ ও সিংহী জুটি। কলহ ছেড়ে মাত্র সাড়ে চার বছরের মধ্যেই প্রেম-ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় ওরা। খাবারের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করে প্রতিদিন সাড়ে ৮ কেজি গরুর মাংস। তাও সপ্তাহে ছয় দিন। রবিবার কোনো খাবার দেওয়া হয় না। অন্য ছয় দিন যেটুকু খাবার দেওয়া হয় ভাগাভাগি করেই খাচ্ছে সিংহ দম্পতি। এ ছাড়া চিড়িয়াখানার লোহার খাঁচায় একে অপরের সান্নিধ্যে থেকে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটছে দীপ-দীপালির। সাদা-সোনালি উঁচু কেশরের দীপ পুরুষ হলেও একটু লাজুক স্বভাবের। তাই দর্শনার্থীদের জ্বালাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে হঠাৎ হুংকার দেয় দীপালি। এরপর ফিরে যায় প্রিয়জনের কাছে। কর্তৃপক্ষ সাদা-সোনালি রঙের এই পুরুষ সিংহের নাম দিয়েছে দীপ। আর সিংহীর নাম দীপালি। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গায়ের রং সাদা-সোনালি। চোখের রং সোনালি, ধূসর বা ধূসর-সবুজ। আর কেশর ও লেজের অগ্রভাগ কালো তামাটে রঙের। চিড়িয়াখানায় আসা দর্শনার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় ওই শ্বেত সিংহ দম্পতি। সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১১ মে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আনা হয় সিংহ দুটিকে। দীপের জন্ম ২০০৯ সালের নভেম্বরে। আর দীপালির জন্ম একই বছর জুনে। জন্মের পর থেকে সাধারণত ১৫ থেকে ২০ বছর বেঁচে থাকে এ জাতের সিংহ। একেকটির ওজন হয় ১৩০ থেকে ১৮০ কেজি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর