মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাঙামাটিতে ফের পাহাড়ধসে আতঙ্ক

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ

প্রতিদিন ডেস্ক

রাঙামাটিতে ফের পাহাড়ধসে আতঙ্ক

টানা বর্ষণে আবার ধসে পড়েছে রাঙামাটির বেশ কিছু পাহাড় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

টানা বর্ষণে তিন পার্বত্য জেলায় বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর কোথাও বুক, কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর পানি জমেছে। চারদিকে থই থই করেছে শুধু পানি। রাঙামাটিতে বিরাজ করছে ফের পাহাড়ধসের আশঙ্কা। বান্দরবানের পাহাড়েও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— রাঙামাটি : রাঙামাটিতে টানা বর্ষণে ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ কারণে গতকাল সকাল থেকেই রাঙামাটি জেলা প্রশাসন বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত মানুষদের মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্র চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়। এদিকে দুই দিন ধরে টানা বর্ষণে একদিকে যেমন বাড়ছে হ্রদের পানি, অন্যদিকে ধসে পড়ছে শহরের বিভিন্ন সড়ক ও রিটার্নিং ওয়াল। মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে রাঙামাটি শহরের বনরূপা-তবলছড়ি-রিজার্ভ বাজার সংযোগ বাঁধ (ফিশারি বাঁধ)। এরই মধ্যে বাঁধের দুই পাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান গতকাল বিকালে জানান, রাঙামাটিতে আবারও ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় জনমনে পাহাড়ধসের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত নতুন করে পাহাড়ধস ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং অব্যাহত রাখা হয়েছে। জানা গেছে, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে সড়কে তৈরি হয়েছে মরণফাঁদ। শহরের তবলছড়ি, ওমদামিয়াহীল, কাটাপাহাড় এলাকা, ফিশারি বাঁধ, পুলিশ লাইন, পর্যটন সড়ক, শিল্পকলা একাডেমি সড়ক, জাদুঘর সড়ক, রাঙামাটি বেতার কেন্দ্রে সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কের মধ্যে অনেকগুলো একপাশে ধসে পড়েছে, আবারও অনেক সড়ক মাঝখানে দুই ভাগ হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কে সড়কে লাল পতাকার বিপদ ও সতর্ক সংকেত দেখানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগে পাহাড়ধসের পর এখনো আতঙ্কে রাত জেগে বসে থাকছেন অনেক পরিবার। কেউ কেউ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে বারান্দায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন পার করছেন। কারণ পাহাড় কেড়ে নিয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারেরও অধিক মানুষের বাড়ি ঘর। তাই নতুন করে বৃষ্টি দেখলেই শিউরে ওঠেন এ অঞ্চলের মানুষ। রাঙামাটির ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ২ হাজারের অধিক মানুষ রয়েছেন। গেল তিন সপ্তাহ ধরে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও রেডক্রিসানের পক্ষ থেকে তাদের খাবার, চিকিৎসা সরবরাহ করা হচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ১৫টি সরকারি ভবনও।

চট্টগ্রাম : প্রবল বর্ষণে গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় সব এলাকা আরও তলিয়ে গেছে। কোথাও বুক, কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর পানি জমেছে। চারদিকে থই থই করেছে শুধু পানি। অতীতে পানি ওঠেনি এমন এলাকাও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। অতীতে হাঁটু পানি হয়েছে এমনসব এলাকায় এবার বুক সমান পানি জমেছে। টানা বর্ষণে পানি জমে চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতার নগরীতে রূপ নিয়েছে। অতি বর্ষণে প্রধান ও উপ-সড়কগুলো দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। শিক্ষার্থী, অফিসগামী ও কর্মস্থলে যাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। অনেক শিক্ষা, সেবা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢুকেছে পানি। চট্টগ্রামে শিশুস্বাস্থ্যসেবার অন্যতম প্রতিষ্ঠান মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা রয়েছে পানির নিচে। এ ছাড়া অতি বর্ষণে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি আর বহির্নোঙ্গরে জাহাজ থেকে খোলা ও বস্তাবন্দী পণ্য খালাসও বন্ধ রয়েছে। গতকাল দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের ডিসি রোড সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় অতীতে সর্বোচ্চ হাঁটু পানি উঠেছিল এমন এলাকায় গতকাল গলি এবং বিভিন্ন বাসার ভিতরে পর্যন্ত হাঁটু ও কোমর পানি জমেছে। নগরীর মুরাদপুর, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বহদ্দার বাড়ি সড়ক, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, খাজা রোড, মিয়াখাননগর, ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, প্রবর্তক মোড়, মেহেদিবাগ, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, সিডিএ আবাসিক এলাকা, পোর্ট কলোনির কয়েকটি সড়ক, গোসাইলডাঙ্গা, ছোটপুল, বড়পুল, বৃহত্তর হালিশহরের বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ফলে অন্তহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ সবাইকে। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, মূল জেটিতে ১৭টি এবং বহির্নোঙ্গরে ৩৫টি জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজে গম, ডাল, চিনি, ইউরিয়া, পাথর, সিমেন্ট ক্লিংকার, লবণ, গমসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে। জেটিতে কেবল গমবাহী একটি জাহাজে কাজ বন্ধ রয়েছে। বাকি ১৬ জাহাজে কাজ চলছে, এরমধ্যে ১২টি কন্টেইনারবাহী। বাকি চারটি বাল্ক কার্গোতে গাড়ি ও পাথর রয়েছে। ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বলেন, বৃষ্টির কারণে বহির্নোঙ্গরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে পারেনি তিনটি ফ্লাইট। পরে শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ফ্লাইট তিনটি অবতরণ করে। এর মধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ ও দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও ছিল বলে জানান শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার রিয়াজুর কবির। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ইউএস বাংলার একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট, জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের ও দোহা থেকে আসা রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ফ্লাইট চট্টগ্রামে অবতরণ করতে পারেনি। এতে চট্টগ্রামের যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট সংস্থা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম পাঠাবেন বলে জানান তিনি। জানা গেছে, সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০০৩৬ ফ্লাইটটি গতকাল সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে নামতে না পেরে দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকায় অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে অধিকাংশ যাত্রী ওমরাহ পালন করে ফিরেছেন। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকাল ৩টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি ছিল মাত্র ৩৭ মিলিমিটার। গত রবিবার সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে এ ধরনের বৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টি আরও তিন-চার দিন থাকতে পারে। এ কারণে আগে থেকেই ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ধসের সতর্কতা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ সহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটে ভাটা শুরু হয় এবং বিকাল ৩টা ১৭ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়।’ অন্যদিকে প্রবলবর্ষণের সময় গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নগর ভবনের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে ‘নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও সাম্প্রতিক বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতকরণে চসিকের উদ্যোগ-কার্যক্রম’ বিষয়ে অবগত করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বর্ষণে চট্টগ্রাম শহরের ২৫-৩০ শতাংশ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা। এসব সড়ক মেরামত কাজ চলমান আছে। বৃষ্টির মধ্যে ব্রিক সলিং ও খোয়া দ্বারা মেরামত করা হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া ফিরে এলে বিভাগীয় অ্যাসফল্ট প্লান্ট দ্বারা কার্পেটিং করে দেওয়া হবে।’

বান্দরবান : গতকাল থেকে পাহাড়ে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে মাটি নরম হয়ে পাহাড়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায়ও আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে পাহাড়ের পাদদেশের বসতিতে ফিরছেন মানুষজন। এদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের কর্মজীবী। তারা বলছেন, পাহাড়ে ঝুঁকির কথা তারাও জানেন। কিন্তু কাজ না করলে খাবার জোটে না বলেই তারা পাহাড়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, পাহাড়ধসের ঝুঁকি আছে এমন স্থান থেকে বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবনের ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার পরিবার। আরও প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল আত্মীয়স্বজনের বাসায়। বান্দরবানের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বসত বাড়িগুলো ঠিকঠাক করে অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই বাস করতে শুরু করেছেন তারা। কোথাও কোথাও নতুন করে ঘর তৈরি করতে পাহাড় কেটে সমান করা হচ্ছে। কেউবা ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে বাড়ির আঙিনা, রাস্তা পরিষ্কার করছেন। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে পাহাড়ের বসতিতে ফিরে আসা পূর্বকালাঘাটার ফেন্সিঘোনার শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়িটি পাহাড়ের নিচে অর্ধেক ঢুকে গিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আমি ফিরে এসে মাটি সরিয়ে বাড়ি পরিষ্কার করেছি। এখন আমরা আগের মতোই এখানে বসবাস করছি।’ এখানে থাকার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বাধা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আসার পর এখানে প্রশাসনের কেউ আসেনি।’ শিরিনের স্বামী সেলিম বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালে না খেয়ে আমাদের মরার মতো অবস্থা হয়েছিল। প্রশাসনের শুকনো খাবারে পেট ভরা তো দূরের কথা, এগুলো খাওয়াও যায় না। কিছু কিনে খাওয়ারও সামর্থ্য ছিল না। এখন বাড়ি ফিরে এসে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছি। বলতে পারেন এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের চেয়ে ভালো আছি।’ বান্দরবান মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ভারি বর্ষণে অনেকগুলো পাহাড় ধসে পড়েছে। অনেকগুলো ধসে না পড়লেও ভিতরে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে এসব পাহাড়ধসে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে আবার ফিরে গেছে, তা আমি জানি। নিজেও দেখেছি। এ বর্ষায় তাদের সেখানে যেতে না দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করার দরকার ছিল।’ এই কর্মকর্তা বলেন, আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, যে কোনো সময় আরও ভারি বৃষ্টি হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে পাহাড় থেকে মানুষকে সরানো সম্ভব না হলে যে কোনো মুহূর্তে আগের মতো প্রাণহানি ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এখন আর আগের মতো ঝুঁকি নেই, তাই সবাই নিজেদের বসতিতে ফিরে গেছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে শুধু পাহাড়ধসের ঝুঁকিতেই মানুষ বসবাস করছে তা কিন্তু নয়, নদীর পাড়ের অনেক মানুষও ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষায় পানি বৃদ্ধি পেলে তাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে যায়। আমরা সব কিছু মিলিয়ে একটি তালিকা করেছি। তাদের জন্য আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্প করব। সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের আশ্রয় দিতে পারব বলে আশা করি।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর