মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

নওগাঁয় প্রকৃতিকে রাঙাচ্ছে সোনালু

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় প্রকৃতিকে রাঙাচ্ছে সোনালু

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সোনালু ফুলের গাছগুলো এখন অপরূপ সাজে সেজে আছে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে হলদাভ ফুল। যা বর্ষণমুখর দিনের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গ্রামাঞ্চলে এ গাছকে অনেকে বানর লাঠি বলেন। আত্রাই উপজেলার মানুষের কাছে এটি হনালু নামে পরিচিত। হলুদ রঙের বাহার নিয়ে ঝুলে থাকা ফুলের সৌন্দর্যে মোহিত করে যে কোনো মানুষকে। উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের আবদুল মুহিত তার এলাকার একটি সোনালু গাছ সম্পর্কে জানান, গাছটির বয়স অনেক বেশি। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে হাজারো পথচারী যাতায়াত করেন। প্রত্যেকেরই দৃষ্টি থাকে এই গাছের হলুদ ফুলের দিকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, অনেক মানুষ এই ফুলের দিকে অবাক তাকিয়ে থাকছেন। জিজ্ঞেস করলে শহিদুল ইসলাম বলেন, আত্রাইয়ে এ রকম গাছ খুব কম আছে। এত সুন্দর ফুল যে কারও মন মাতাতে পারে। আজিজুল হক, হৃদয় কুমার দেবনাথ, শাকিল আহমেদ জানান, তাদের কাছে মনে হচ্ছে সুন্দর হলুদে সাজানো অপরূপ সৌন্দর্য ফুল দেখেছেন। স্থানীয় লোকেরা মনে করছেন, এই সোনালু বা বানর লাঠি গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। সোনালু চারা রোপণ না করায় এ অবস্থা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সোনালুর ফল পাকতে দীর্ঘ সময় নেয়। পেকে গেলে ফল মাটিতে পড়ে সেখান থেকে বীজ ছড়িয়ে বংশবিস্তার ঘটায়। কলমের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার সম্ভব হয় না। তবে গাছের শেকড় থেকেও বংশবিস্তার ঘটে। সোনালু ঔষুধি গাছের তালিকায় রয়েছে। বিশেষ করে সোনালুর ফল বাত, বমি প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া গাছ ও জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহূত হয়। সোনালু এ দেশের স্থায়ী বৃক্ষ। এর আদি বাস পূর্ব এশিয়ায়। বৃক্ষটির ডালপালা ততটা ছড়ানো নয়। পাতার রং গাঢ় সবুজ, মসৃণ ডিম্বাকৃতির। সোনালুর বৈজ্ঞানিক নাম Cassia fistula এবং Albizia inundat। সোনালি রঙের ফুলবিশিষ্ট বৃক্ষ। উদ্ভিদের শ্রেণী বিন্যাসে Fabaceae গোত্রের এ বৃক্ষের ফল লম্বাটে। সোনালি রঙের ফুলের বাহার থেকেই সোনালু নামে নামকরণ। ইংরেজি ভাষায়ও একে বলা হয় Golden Shower Tree বা স্বর্ণালি ঝর্ণার বৃক্ষ। সোনালি হলদে রঙের একেকটি ফুল চওড়ায় আড়াই থেকে তিন সেন্টিমিটার। পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি। ফুল ফোটার পর থেকে এটি সোনার চেইনের মতো শাখা ও কাণ্ডে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ফল গোলাকার লম্বাকৃতির।

সর্বশেষ খবর