শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাগেরহাটে আলোচনায় শেখ হেলাল বিএনপির প্রার্থী রবি

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বাগেরহাটে আলোচনায় শেখ হেলাল বিএনপির প্রার্থী রবি

সারা দেশের মতো বাগেরহাটেও বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। এখানে সংসদীয় ৪টি আসন এলাকায় (৯৫, ৯৬, ৯৭ ও ৯৮) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন তরুণ নেতাও মনোনয়ন প্রত্যাশী। নির্বাচনী এলাকায় নবীন-প্রবীণ সব নেতাই শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে পোস্টার ও ব্যানার সাঁটিয়েছেন। হাট-বাজারসহ সমগ্র জনপদেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দ্র আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কে কোন আসনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় উঠছে। তবে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে বাগেরহাট-১ আসন। আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা হেভিওয়েট শেখ হেলাল উদ্দিন এমপির মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। তবে এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর যুগ্ম সম্পাদক সেখ রবিউল আলম রবি।

বাগেরহাট-১ (মোল্লাহাট-ফকিরহাট ও চিতলমারী) : গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়ার সীমান্তে মধুমতি নদীর বিপরীত পাশে সংসদীয় এ আসনটিতে এখন এমপি শেখ হেলাল। আগামী নির্বাচনেও তিনি দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে থাকবেন বলে এলাকার নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। তবে বাগেরহাট সদর আসন থেকে শেখ হেলাল নির্বাচন করলে এই আসনে তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের নামও আলোচনা হচ্ছে। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সেখ রবিউল আলম রবি। ঢাকা ও লন্ডনে তার যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এ আসনে আলোচনায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, স্থানীয় বিএনপি নেতা মনজুর মোর্শেদ স্বপন ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা।

বাগেরহাট- ২ (সদর ও কচুয়া) : সদরের এই আসনটি বিগত সেনা সমর্থিত সরকারের সময়ে নির্বাচন থেকে দুই দফায় আওয়ামী লীগের। জল্পনা চলছে, এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান এমপি ও রাকসুর সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট মীর শওকত আলী বাদশা। তবে জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাকী তালুকদারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। বিএনপি থেকে দলের বাগেরহাট জেলা সভাপতি এম এ সালাম ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম খান দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। মনির অবশ্য বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার আসামি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী। জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু এ আসনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী।

বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মংলা) : এই আসনে বর্তমান এমপি খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য একক প্রার্থী। ‘৯১ সাল থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সবকটি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত কেউ কাউকে ছাড় দেয়নি। বিএনপির হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে এই আসনে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। এ ছাড়া মংলা পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপি নেতা জুলফিকার আলীও দলীয় টিকিট পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জেলা জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শেখ আবদুল ওয়াদুদ ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।

বাগেরহাট- ৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) : এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বর্তমান এমপি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগও বেশ তৎপর। তবে বর্তমান এমপির বয়স ৮০’র ঊর্ধ্বে। দলের তরুণ নেতৃত্বে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন সোহাগ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রতীক পেতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। সোহাগ বৈবাহিক সূত্রে ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ মনিরুজ্জামান বাদলের জামাতা হওয়ায় বাড়তি সুবিধাও পাচ্ছেন। তার চাচা শ্বশুর শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে সোহাগ ছাড়াও এ আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এবং মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলনও দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। তবে ’৯১-এর নির্বাচনে তিনি কাস্তে প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিপরীতে ছিলেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান খান মতিয়ার রহমান, জেলা সহসভাপতি কাজী খাইরুজ্জামান শিপন ও বিএনপি নেতা ফরাজী মনিরুল ইসলামও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। তবে বিএনপি-জামায়াত জোট থাকলে এই আসনে এবারও জামায়াত থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে দলটির সংখ্যালঘুবিষয়ক উপদেষ্টা সোমনাথ দে এই আসনে জাপার একক প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলে গণসংযোগ করছেন।

 

সর্বশেষ খবর