শিরোনাম
শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি প্রত্যাহার করল ইউনেস্কো

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

সুন্দরবনের কাছাকাছি রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে আপত্তি তুলে নিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো। ‘হুমকির মধ্যে থাকা বিশ্ব ঐতিহ্য’গুলোর তালিকা থেকে সুন্দরবনের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংস্থাটি। ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, রামপালের বর্তমান অবস্থান সুন্দরবনের জন্য কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছে ইউনেস্কো। পোল্যান্ডের ক্রাকোভে ইউনেস্কোর ৪১তম অধিবেশনে রামপাল বিষয়ে নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ওই অধিবেশনে। জানা যায়, সুন্দরবনের কাছে রামপালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের শুরু থেকেই পরিবেশবাদীরা এর বিরোধিতা করে আন্দোলন করে। ২০১৬ সালের শুরুতে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির দৃষ্টিগোচর হয় রামপাল ইস্যু। সুন্দরবনের তখনকার অবস্থা এবং বনের ওপর রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব খতিয়ে দেখতে গত বছর মার্চে ডব্লিউএইচসি ও আইইউসিএনের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। তারা রামপাল প্রকল্প স্থান, সুন্দরবন ঘুরে এবং সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে গত বছর জুনে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে রামপালকে সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে উল্লেখ করা হয় এবং প্রকল্পটি বাতিল করে অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে বলা হয়। এরপর ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে রিপোর্ট প্রকাশ করে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায়। এ নিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র ও আইইউসিএন যৌথভাবে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত স্থান থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে, যা সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা করে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি এই সিদ্ধান্তে আসে যে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র তার বর্তমান অবস্থানে নির্মিত হলে কোনো ক্ষতি হবে না। এর সঙ্গে তারা বেশকিছু প্রয়োজনীয় বিষয় প্রশমনের পরামর্শ দেয়। ২০১৬ সাল থেকে সুন্দরবনকে রক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপকে তারা স্বাগত জানায়। কমিটির অনুরোধে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট (এসইএ) শুরু করতে সম্মত হয় বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর