আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বরিশালের ৬টি আসন (সংসদীয় ১১৯, ১২০, ১২১, ১২২, ১২৩ ও ১২৪) নিয়ে স্থানীয়ভাবে চলছে নানা আলোচনা। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। বসে নেই জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টি। তবে শেষ পর্যন্ত জোট-মহাজোট না এককভাবে রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে, তার দিকেই নজর সবার। বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে এবারও আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের একক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ ও বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান। এ ছাড়া বিএনপির সংস্কারপন্থি নেতা ও সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের নামও আলোচনায় আছে। বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এ আসনে এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বর্তমান এমপি তালুকদার মো. ইউনুছ। তবে তিনি বরিশাল-৫ (সদর) থেকেও মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ ছাড়া সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনি, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহে আলম, বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌর মেয়র সুভাষ চন্দ্র শীল, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রহমান খান এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজুর নাম মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা ও উজিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদলও ১৪-দলীয় জোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সরফুদ্দিন সান্টু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতা ইলিয়াস খান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রওনকুল আলম টিপু। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি ও সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম ফারুক অভির নামও এলাকায় আলোচনায় আছে। বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বলরাম পোদ্দার, সাবেক অতিরিক্ত সচিব সিরাজউদ্দিন আহমেদ, বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী এমদাদুল হক দুলাল ও মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ বারী। জোটভুক্ত নির্বাচন হলে এ আসনে ১৪ দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান এমপি জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের ব্যক্তিগত সহকারী আতিকুর রহমান আতিক। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান ও জয়নাল আবেদীন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন মঙ্গু মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান এমপি পঙ্কজ দেবনাথ, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেব আহম্মেদ ও একটি বেসরকারি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বরিশাল জেলা (উত্তর) বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী শাহ মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান, যুবদলের সাবেক নেতা নূরুর রহমান জাহাঙ্গীর ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আবদুল খালেক হাওলাদার। বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন প্রয়াত সাবেক মেয়র ও সাবেক এমপি শওকত হোসেন হিরণের সহধর্মিণী জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম (অব.), মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ মো. সাইদুর রহমান রিন্টু। সদর আসনে বরাবরের মতো বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী দলের যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার। দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁনও সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ আসনে ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মেজর জেনারেল আবদুল হাফিজ মল্লিক (অব.), উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল হক চুন্নু, সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রশীদ খান, প্রয়াত সাবেক এমপি মাসুদ রেজার সহধর্মিণী জেলা পরিষদ সদস্য আইরিন রেজা ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক মঞ্জু। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটভুক্ত নির্বাচন হলে এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বতর্মান এমপি নাসরিন জাহান রত্না আমিন। জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করলেও এ আসনে প্রার্থী হবেন তিনি। রত্না পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারের স্ত্রী। এ ছাড়া ১৪-দলীয় জোটভুক্ত নির্বাচন হলে এ আসনে জোটের মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় জাসদ নেতা মো. মহসীন। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি, উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হোসেন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহীদ হাসান, বিএনপির সাবেক বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজন, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, উপজেলা বিএনপির সদস্য আবদুস শুকুর বাচ্চু নেগাবান ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনোয়ার হোসেন (অব.)।
