বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
কুয়াকাটার সমস্যা ও সম্ভাবনা ২

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে জেগে উঠবে সাগরকন্যা

সঞ্জয় কুমার দাস, পটুয়াখালী

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে জেগে উঠবে সাগরকন্যা

কুয়াকাটাকে প্রকৃত সাগরকন্যারূপে সাজাতে সরকার মহাপরিকল্পনা বা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে। যা বাস্তবে রূপ নিলে আধুনিকতায় জেগে উঠবে কুয়াকাটা। তখন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের কুয়াকাটা হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী। এতেকরে শুধু দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রাই যোগ হবে না, সরকারের কোষাগারেও জমতে থাকবে প্রচুর রাজস্ব। কুয়াকাটা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মাস্টার প্ল্যানের আওতায় কুয়াকাটাকে সাজাতে আর বিশ্ববাসীর কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে করা হবে ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ। এর আওতায় থাকবে মেরিন পার্ক, বিশাল সাগর। আর প্রকৃতির মনোরম পরিবেশ উপভোগে পর্যটকদের সুবিধার্থে নির্মিত হবে ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে আন্তর্জাতিক মানের ইকোপার্ক, এক্সক্লোসিভ ট্যুরিস্ট জোন, আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, সি একুরিয়াম, হোটেল-মোটেল জোন, শপিং মল, বাস টার্মিনাল। আরও থাকবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ বিভিন্ন উপাসনালয় নিয়ে রিলিজিয়াস কমপ্লেক্স। থাকবে গোরস্থান, শ্মশান। বিদেশি পর্যটকদের জন্য আলাদা স্থানে থাকবে ফরেন ট্যুরিস্ট জোন। থাকবে কনভেনশন সেন্টার, বার ইত্যাদি। এসব হলে কুয়াকাটার স্বরূপ পুরো পাল্টে যাবে। দেশের মধ্যে এটি হবে অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসুরা নির্দ্বিধায় ছুটে আসবেন এখানে। তারা অবলোকন করবেন ইতিহাসের হৃত গৌরব-ঐতিহ্য। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জেলার সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে এই সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার অবস্থান। প্রায় আড়াইশ বছর আগে বর্মি রাজার অত্যাচার থেকে প্রাণ রক্ষার্থে আরাকান রাজ্য থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের বেশ কিছু পরিবার তাদের পরিজন নিয়ে পালিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে এখানে অবস্থান নেন। তারাই গড়ে তোলে জনবসতি। তাদের মাধ্যমেই নজর কাড়ে সাগরকন্যাখ্যাত কুয়াকাটা। এই রাখাইনরা গভীর জঙ্গলের হিংস্র বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে জীবন রক্ষা করতে ঝোপ-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে বিশেষ ব্যবস্থায় টং ঘর তৈরি করে কুয়াকাটাকে বাসযোগ্য করে তুলেছিল। তারা মাটির গভীরে পাতকুয়া খনন করে পানি তুলে জীবন ধারণের ক্ষেত্র রচনা করে। জনশ্রুতি আছে, সেই পাতকুয়া থেকেই নামকরণ হয়েছে আজকের কুয়াকাটা। এখানে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সি-বিচ, কুয়াকাটার কুয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও রয়েছে বিশাল সাগর, সাগরের ঢেউ আর গর্জন। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে মিস্ত্রিপাড়া বৌদ্ধবিহারে এশিয়ার সর্ববৃহৎ বৌদ্ধমূর্তি, রাখাইন পল্লী, ঝাউ বাগান, ফয়েজ মিয়ার লেক, পিকনিক স্পট, লাল কাঁকড়ার চর, ফাতরার বন, নারকেল বাগান, গঙ্গামতির চর, ফ্যালার চর, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান। আছে প্রায় আড়াইশ বছর আগের পিতল ও কাঠের তৈরি পুরনো বিশাল নৌকা। রয়েছে শুঁটকি পল্লী।

সর্বশেষ খবর