শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঝালকাঠিতে হেভিওয়েটদের লড়াই

এস এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে হেভিওয়েটদের লড়াই

ঝালকাঠির রাজনৈতিক কার্যক্রম আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। জেলার দুটি (১২৫ ও ১২৬) সংসদীয় আসনেই আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে ঘিরেই ঝালকাঠির নেতা-কর্মীরা চাঙ্গা।

অন্যদিকে রাজনৈতিক মামলা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা সফর ও সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ঝিমিয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন কিছুটা চাঙ্গাভাব। এ দুটি আসনে জাতীয় পার্টি অনেকটা দুর্বল। তবে জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) চেয়ারম্যান বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ঝালকাঠিতে ভালো অবস্থান আছে।

ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। আগামীতেও এ আসনে তার মনোনয়ন নিশ্চিত। এখানে দলের আর কোনো প্রার্থী নেই। তিনি এ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মাহবুবুল হক নান্নু। এছাড়াও জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মিঞা আহম্মেদ কিবরিয়া, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর, সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আহমেদ খান  দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপরতা চালাচ্ছে। জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপরতা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এম এ কুদ্দুস খান, কেন্দ্রীয় নেতা এম রফিক ও জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু। অপরদিকে জাসদ (রব) এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও জেলা শাখার সভাপতি আবদুর রব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন। ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রধান দুই প্রার্থী নিয়েই নানা সমালোচনা রয়েছে। এ আসনের বর্তমান এমপি বজলুল হক হারুন (বিএইচ হারুন) সম্প্রতি বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। সম্প্রতি ঢাকার হোটেল রেইনট্রিতে দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে। হোটেলটি বিএইচ হারুনের ছেলে মাহির হারুনের। ফলে বিএইচ হারুন এলাকায় অনেকটা বেকায়দায় পড়ে যান। রেইনট্রিতে ধর্ষণ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করায় কাঁঠালিয়া উপজেলার বাদল হাওলাদার নামে এক সাংবাদিককে মারধর করে বিএইচ হারুন সমর্থিত ক্যাডাররা। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা আন্দোলনে নামলে আরও চাপে পড়েন বিএইচ হারুন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন দৈনিক বাংলাদেশ সময় পত্রিকার সম্পাদক ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ড. এম এ হান্নান ফিরোজ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির। হান্নান ফিরোজ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সংগঠক। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। ২০০১ সালের পর দলে তার অবদানের কথা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাবেক অতিরিক্ত সচিব মু. ইসমাইল হোসেন এবং মনিরুজ্জামান মনির এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর দলের হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। শাহজাহান ওমর জানিয়েছেন, হাই কোর্ট থেকে ওই মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। কোনো কারণে তিনি নির্বাচন না করতে পারলে এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন রফিকুল ইসলাম জামাল। এ ছাড়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকতও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। পিরোজপুরের পাশাপাশি এ আসনে আগামীতেও নির্বাচন করতে চান জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) চেয়ারম্যান বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে প্রার্থী হতে ইতিমধ্যেই প্রচারণা শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সেলিমা খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ কে এম সেলিম রেজা, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য কামরুল ইসলাম খান ও কাঁঠালিয়া জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা।

 

 আগামীকাল : পিরোজপুরের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা

সর্বশেষ খবর