শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বরিশাল-ভোলা সড়কে হচ্ছে ‘ফুল সরণি’

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল-ভোলা সড়কে হচ্ছে ‘ফুল সরণি’

বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেশের প্রথম ‘বরিশাল ফুল সরণি’ বিনির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ১৫ জুলাই মহাসড়কের বিশ্ববিদ্যালয় মোড় (হিরন পয়েন্ট) থেকে চরকাউয়া জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার (৪৮০০ মিটার) সড়কের দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল গাছের ৩ হাজার চারা রোপণের মাধ্যমে বিনির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। প্রসঙ্গত, গত মে মাসে জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে জনগণের স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ‘ফুল সরনি’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য চারা ও আনুষাঙ্গিক ব্যয় বাবদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বেচ্ছায় এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং নগরীর ৩টি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা, ২টি ইউনিয়ন পরিষদসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্টদের মতে, চারা রোপণের ৩ বছরের মধ্যে মহাসড়কের ওই অংশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এক অপরূপ স্থান হয়ে উঠবে। বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ফুল সরনির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। জানা গেছে, ফুল সরনি বিনির্মাণ অভিযান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সাভার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল গাছের ৩ হাজার চারা। গতকাল গাছের চারা রোপণের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে গর্তকরণের কাজও শেষ হয়েছে। এর আগে ১১ জুলাই পর্যন্ত এই অভিযানে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের রেজিস্ট্রেশন করা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক সভাও করেন জেলা প্রশাসক। অভিযান সফল করার জন্য জেলা প্রশাসক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক, বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর স.ম ইনামুল হাকিম, সরকারি বরিশাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অলিউল ইসলাম এবং সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সচীন কুমার রায়সহ জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কথা ব্যক্ত করেছেন। এদিকে বরিশালের প্রথম ফুল সরনি বিনির্মাণ অভিযানের সার্বিক বিষয় তুলে ধরতে গতকাল সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসনের সভা কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। তিনি জানান, আগামী ১৫ জুলাই বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের বিশ্ববিদ্যালয় মোড় থেকে চরকাউয়া জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ৩ হাজার সৌন্দর্য বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল গাছের চাপা রোপণ করা হবে। ওইদিন সকাল ১০টায় অভিযান শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ১০০ মিটার করে ৪৮টি খণ্ডে ভাগ করে সেখানে চারা রোপণের জন্য ৪৮টি দল নির্বাচন করা হয়েছে। নান্দনিকতা ফুটিয়ে তুলতে পর্যায়ক্রমে একেক খণ্ডে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু এবং জারুল গাছের চারা রোপণ করা হবে। একেক ধরনের চারা রোপণকারী দলের সদস্যদের কপালে বেঁধে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তৈরি করা হয়েছে বেগুনি, সোনালি ও লাল ফিতা। অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের উজ্জীবিত রাখতে এবং উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাখা হচ্ছে একাধিক সাংস্কৃতিক ও বাদক দল। এছাড়া দেশের প্রথম স্বীকৃত ফুল সরনি বিনির্মাণ অভিযান সরাসরি জেলা প্রশাসনের ফেসবুক টিভিতে সম্প্রচার করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর