শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

উট পাখির খামার হাবিপ্রবিতে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

উট পাখির খামার হাবিপ্রবিতে

মরুভূমির জাহাজ খ্যাত উটপাখি এখন বাংলাদেশে পালন করার প্রক্রিয়া চলছে। এ লক্ষ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি অনুষদের অডিটোরিয়াম-২-এর পাশে গড়ে তোলা হয়েছে উটপাখির খামার।

প্রসঙ্গত, উটপাখি বহুদিন বাঁচে, ডিমও দেয় দীর্ঘদিন। এর মাংসও সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তাই এ পাখিকে লাভজনক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গবেষণারত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুই মাস বয়সের উটপাখি আনা হয়েছে হাবিপ্রবিতে। মোট ১১টি বাচ্চা আনা হয়েছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে কয়েকটি মারা গেছে। বর্তমানে রয়েছে ৭টি উটপাখি। বাচ্চাগুলো পূর্ণবয়স্ক হতে প্রায় আড়াই বছর লাগবে এবং সেই সময় থেকে ডিমও দেবে। একেকটি ডিম দেড় কেজি ওজনের হয়। বছরে একেকটি উটপাখি ৬০ থেকে ১০০টি ডিম পাড়ে। এ পাখি সাধারণত দু-চার বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। গ্রোথ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া গরু-ছাগলের চেয়ে বেশি। পূর্ণবয়স্ক একটি উটপাখির মাংস প্রায় আড়াই মণ হয়। এদের খাদ্য সহজলভ্য। এদের খাদ্য নেপিয়ারসহ যে কোনো ঘাস, পোলট্রি ফিড ও পাথর। গবেষক ডা. মো. রুকুনুজ্জামান জানান, উটপাখির চামড়া মূল্যবান এবং এদের মাংস আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। একটি প্রাপ্তবয়স্ক উটপাখির ওজন ৬০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীর মাংসের তুলনায় উটপাখির মাংসে চর্বির পরিমাণ ৩ শতাংশের কম এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় স্বাস্থ্যসচেতন লোকজন উটপাখির মাংস গ্রহণে আগ্রহী। প্রধান গবেষক ও জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবদুল গাফফার মিয়া বলেন, ‘উটপাখি নিয়ে গবেষণায় আমরা আশাবাদী। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় তাদের বৃদ্ধি ঠিকই আছে। বছরে একটি উটপাখি ৬০ থেকে ১০০টি ডিম পাড়ে। এর মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ সফল উৎপাদন হয়। অন্যদিকে গরু বছরে একটি মাত্র বাচ্চা দেয়। একটি উটপাখির বাচ্চার দাম ৩০-৩৫ হাজার টাকা। অতএব সেই তুলনায় গরু পালনের চেয়ে উটপাখি পালন বেশি লাভজনক হবে। কারণ উটপাখি ৫০ থেকে ৭০ বছর উৎপাদনক্ষম থাকে এবং এরা বাঁচে ৮০ থেকে ১০০ বছর। আর এদের গ্রোথ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া গরু-ছাগলের চেয়ে বেশি। ফলে বাণিজ্যিকভাবে উটপাখির খামার আমাদের দেশে লাভজনক হবে। আর এখনই অনেকে এই উটপাখির খামার করার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে উটপাখির খামার গড়ে উঠলে তা গরুর বিকল্প হয়ে দাঁড়াবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর