শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভাঙন ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

সঞ্জয় কুমার দাস, পটুয়াখালী

ভাঙন ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস। তাই সাগরের রুদ্ররোষে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে ভাঙছে কুয়াকাটা। এরই মধ্যে ভাঙনে সৈকতের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন কুয়াকাটা রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে। এটি ভেঙে গেলে জোয়ারের পানি ঢুকে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এ অবস্থায় দায়িত্বশীল মহল থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলছে, তারা কুয়াকাটা রক্ষা বেড়িবাঁধের টেকসই নির্মাণে ডিপিডি প্রকল্প তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন। ২০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি পাস হলে কুয়াকাটাকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করা যাবে। স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৮ নং পোল্ডারের এই বেড়িবাঁধটি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার করলেও তেমন কোনো কাজে আসেনি। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে খাজুরা পয়েন্ট থেকে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার কুয়াকাটার ঝাউবাগান শেষ পয়েন্ট পর্যন্ত। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে সাগরের বড় বড় ঢেউয়ের তোড়ে আর প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের ভাঙনে বর্তমানে সৈকতের জিরো পয়েন্ট রয়েছে হুমকির মুখে। খাজুরা পয়েন্ট থেকে বেড়িবাঁধের আড়াই কিলোমিটার অংশে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লক পাইলিং নির্মাণ কাজ করা হলেও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যেনতেনভাবেই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে এর এক অংশের কিছু এলাকা দেবে গেছে। কিছু অংশ হুমকির মুখে রয়েছে। কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস আর বর্ষা মৌসুমে বড় বড় ঢেউ সাগর তীরে আছড়ে পরে প্রতিবছরই ৫০ থেকে ১০০ ফুট ভেঙে আসছে ভূখণ্ডের দিকে। তাই কুয়াকাটা রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পরিকল্পিতভাবে সিসি ব্লক পাইলিং করে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা উচিত। এ বিষয়ে সরকারের ওপর মহলের সুদৃষ্টি একান্ত দরকার। কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, যে কোনো দুর্যোগের হাত থেকে কুয়াকাটাকে বাঁচাতে পরিকল্পিতভাবে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। পর্যটনকেন্দ্রসহ বিশাল এলাকার মানুষের জানমাল ও ফসলি জমি রক্ষার উদ্যোগ না নিলে কুয়াকাটা নামক স্থানটি সাগরে বিলীন হয়ে যাবে। তবে চলতি বর্ষা মৌসুমে ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে কোনো রকমে রক্ষা করা যাবে কুয়াকাটাকে। কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, সি-বিচের তটরেখা বা শোর লাইন রক্ষায় ৪৮ নং পোল্ডার বেড়িবাঁধের কুয়াকাটা অংশের ৫ কিলোমিটার এলাকায় ২০০ কোটি টাকার একটি ডিপিডি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যা অনুমোদনের অপেক্ষায়। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে সি-বিচ ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাসহ কয়েকটি এলাকা ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে নিরাপদ থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর