বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপি রয়েছে পর্যবেক্ষণে

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপি রয়েছে পর্যবেক্ষণে

নির্বাচনের হাওয়া বইছে হাওরবেষ্টিত এলাকা নেত্রকোনায়ও। এ জেলার পাঁচটি সংসদীয় (১৫৭, ১৫৮, ১৫৯, ১৬০ ও ১৬১) আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দলেই রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। নবীন-প্রবীণের লড়াই হবে এ জেলায়। ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেতে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। অনেকেই কেন্দ্রে সিনিয়র নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। গত রমজানকে পুঁজি করে ইফতার পার্টি ও ঈদ-পরবর্তী পুনর্মিলনীর মাধ্যমে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীই চালিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণা। অনেকেই আবার হাওরে দুর্গতদের সাহায্য-সহায়তার মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। তবে এবার নেত্রকোনায় প্রধান দুই দলেই বেশ তরুণ নেতার আগমন ঘটেছে। তারা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেছেন।

নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) : এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন বর্তমান এমপি ছবি বিশ্বাস। এ ছাড়া সাবেক এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী, কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য এরশাদুর রহমান মিন্টু, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক পিএস মানু মজুমদার ও সাবেক এমপি জালাল তালুকদারের পুত্র শাহ কুতুব উদ্দিন রুয়েলও দলীয় প্রতীক পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত দলের কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের। এ ছাড়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলডিপি থেকে সাবেক হুইপ করিম আব্বাসীও জোটগতভাবে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) : ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এমপির নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে এ আসনটি তার হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছেন সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান খসরু, সাবেক ছাত্রনেতা ও চলচ্চিত্র অভিনেতা রানা হামিদ এবং শামসুর রহমান লিটন। এ ছাড়া মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন লে. কর্নেল নূর খান (অব.), ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোস্তফা আলমগীর, শামছুর রহমান ওরফে ভিপি লিটন ও ময়মনসিংহ জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম। বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল বারী ড্যানী। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. আরিফা জেসমিন নাহিন, জেলা বিএনপির সম্পাদক ডা. আনোয়ারুল হক ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মনিরুজ্জামান দুদুও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) : এ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। এ আসনে আলোচনায় রয়েছেন তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যাপিকা অপু উকিল। তবে বর্তমান এমপি ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেছেন। এ ছাড়া সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাসান, শিল্পপতি শামছুল কবীর খান ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবীর রাহাতও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক হিলালী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভুঁইয়া দুলাল এবং সাবেক এমপি মরহুম নূরুল আমিন তালুকদারের ছেলে রায়হান আমিন রণি, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাসান বিন সোহাগও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) : এ আসনে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান এমপি রেবেকা মমিন ও ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম ছাত্রনেতা শফি আহমেদ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই আসনে ‘বিজয় কি-বোর্ড’-এর প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বারও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপরতা চালাচ্ছেন। সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাপ্টেন (অব.) মঞ্জুরুল আলমও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান তালুকদার, লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আতিকুল হক, মোহনগগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আ ফ ম শফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা চৌধুরী ও জেলা বিএনপি নেতা জহির ফারুক দলীয় প্রতীক পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে আলোচনায় রয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমান এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীরপ্রতীক) ও সাবেক ডিআইজি আবদুল হান্নান দলীয় প্রতীক পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শহীদুল্লাহ ইমরান, সাবেক এমপি ডা. মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রাবেয়া আলী ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদার জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

আগামীকাল : কিশোরগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর