ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রংপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করছে ইসি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর শুক্র ও শনিবার। এক্ষেত্রে ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বা ২৪ ডিসেম্বর রবিবার ভোটের সম্ভাব্য তারিখ হতে পারে। ২৫ ডিসেম্বর বড় দিনের ছুটি রয়েছে। এ কারণে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা আছে ইসির।
বাংলাদেশের ভোটারদের সঙ্গে ইভিএমের প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এরপর স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে সফলভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও কারিগরি ত্রুটিকে কেন্দ্র করে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে এ মেশিন আটকে যায়। এরপর নিজেদের উদ্যোগে ইভিএম তৈরির উদ্যোগ নেয় ইসি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের তৈরি ইভিএম ব্যবহারের ভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে সে উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে ইসি। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোয় তা ব্যবহারের উদ্যোগ আছে। সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসেম্বরের শেষার্ধে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। হয়তো দ্বিতীয় সপ্তাহ পর। কারণ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বিভিন্ন সমাপনী পরীক্ষা থাকে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ নির্বাচনের ন্যূনতম ৪৫ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করি। এ ক্ষেত্রেও তাই করা হবে। ইভিএম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা করেছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক বা একাধিক ওয়ার্ড ইভিএম বা ডিভিএম পরীক্ষামূলকভাবে করা যায় কিনা এ বিষয়ে আমরা কাজ করব। সম্ভাব্যতা যাচাই করে অন্তত এক বা একাধিক ওয়ার্ডে সেটা আমরা করার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ৩১ জুলাই বেলা ১১টায় সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক হবে। ওই বৈঠকের আগেই হয়তো নির্ধারণ হবে কবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক। এজেন্ডাও এ সময় নির্ধারণ হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা পাব। অপর পাঁচ সিটি রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও গাজীপুর নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তিনি জানান।২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রথম সভা থেকে পাঁচ বছরের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসাবে আগামী ২০ অক্টোবর হতে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে রংপুরে। এর আগে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, কমিশন সভায় নির্বাচন ও ভোটারসহ প্রস্তুতিমূলক সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করা হবে, যাতে পরবর্তী সভায় ভোটের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে পর্যালোচনার সুযোগ থাকে। রংপুর সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৯৬টি, ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৭৭টি। পাঁচ বছর আগে ভোটার ছিল ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। এবার দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো ভোট হবে এ সিটিতে।
