শিরোনাম
শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিলেটে এগিয়ে কামরান-আরিফ বাকিরাও মাঠ ছাড়বেন না

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে এগিয়ে কামরান-আরিফ বাকিরাও মাঠ ছাড়বেন না

কামরান - আরিফ

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতায় গরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে ময়দান। নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে। এ জন্য মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নে আগ্রহীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আওয়ামী লীগ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বিএনপি থেকে সিসিকের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে রয়েছেন। তবে মেয়র পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীরাও রয়েছেন মাঠে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৫ জুন। আগামী বছরের শুরুর দিকে সিসিকের আরেকটি নির্বাচন আয়োজনের তোড়জোড় চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচনের জন্যই সিলেটে মাঠে তৎপর সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা।

জানা যায়, মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী চারজন। এরা হলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত না থাকলেও সেলিম অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন কামরান। গত ৮ জুলাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা কামরানকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সিসিকের প্রথম দুই মেয়াদের মেয়র কামরান গত নির্বাচনে বিএনপির আরিফের কাছে হেরেছিলেন। তবে হারের পরও মাঠছাড়া হননি তিনি। সভানেত্রীর সংকেত পেয়েই আরও জোরেশোরে প্রচারণায় নেমেছেন সাবেক সিটি মেয়র কামরান। তবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্যান্য প্রার্থী কামরানকে এখনই মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ। তারা বলছেন, দলের মনোনয়ন বোর্ডই প্রার্থী ঘোষণা করবে। এর আগে কেউ দলীয় প্রার্থী হতে পারেন না।

এ ব্যাপারে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। তার নির্দেশে আমি নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে আরও সক্রিয় হয়েছি। আমাকে নিয়ে মানুষের প্রত্যাশাও অনেক বেশি।’ সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গত প্রায় চার বছর ধরে মেয়র পদে নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। দল থেকে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী। দল থেকে এখনো কাউকেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। সবার জন্য সুযোগ রয়েছে।’ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আজাদুর রহমান আজাদ ও মাহিউদ্দিন সেলিম বলেন, দলীয় সভানেত্রী মনোনয়ন দিলে তারা নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছেন। এদিকে, সিসিক নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আছেন সিসিকের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও সিটি কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তবে এ দৌড়ে আরিফই এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিসিকের গত নির্বাচনে জয়ী হয়ে মেয়র আরিফ স্বস্তিতে ছিলেন না। সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তাকে প্রায় দুই বছর কারান্তরীণ থাকতে হয়েছে। এ জন্য তার প্রতি দলের নেতা-কর্মীদের সহানুভূতি রয়েছে। এ ছাড়া নগরীর উন্নয়নে আরিফের কিছু পদক্ষেপ সাধুবাদ পেয়েছে নগরবাসীর কাছে। এসব বিবেচনায় বিএনপির হাইকমান্ড আগামী নির্বাচনেও আরিফের ওপর আস্থা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে আরিফের দলীয় মনোনয়ন কঠিন করে তুলতে পারেন অন্যান্য প্রার্থী। নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে তারা জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি দলের মনোনয়ন চাইব। দল নিশ্চয়ই যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এক্ষেত্রে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আমার কারান্তরীণ হওয়া, মেয়র হিসেবে নগরবাসীর জন্য আমার অবদান, কর্মতৎপরতা সবকিছুই বিবেচিত হবে।’ সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘দলের নেতা-কর্মী, সাধারণ জনতাসহ সবাই চাইছেন আগামী নির্বাচনে আমি প্রার্থী হই। দলের মনোনয়ন চাইব আমি।’

নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘১৯৯৫ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিলেও আমি তা গ্রহণ করিনি। এখন আমি মনে করছি, সিটি করপোরেশনে কাজ করার জন্য আমি প্রস্তুত। দলের হাইকমান্ডের কাছে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী।’

সর্বশেষ খবর